নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে হাইব্রিড রাজনীতির এক চাঞ্চল্যকর উদাহরণ হয়ে উঠেছেন দুলাল। এক সময় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তি বর্তমানে বিএনপির কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দলীয় পরিচয়ের পরিবর্তনের পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দালালি এবং সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দুলালের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় বর্তমানে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে। তিনি বিভিন্ন সময় দলটির বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বিএনপির কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করছেন এবং দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। এই দ্বৈত পরিচয় তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দুলালের বিরুদ্ধে দালালির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তিনি বিভিন্ন সরকারি অফিসে কাজ করিয়ে দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছেন। বিশেষ করে মিরপুর বিআরটিএ অফিসে তার দালালি কার্যক্রম ব্যাপকভাবে পরিচিত। সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে, দুলাল তাকে হুমকি দেন এবং অফিসে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেন।
দুলালের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর, তিনি সাংবাদিকদের হুমকি দিতে শুরু করেন। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, “নিউজ না কাটা পর্যন্ত বিআরটিএ তে ঢুকতে পারবি না”। এই ধরনের হুমকি সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
দুলালের দালালি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিআরটিএ কর্মকর্তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তারা দুলালের প্রভাব ও হুমকির কারণে নীরবতা পালন করছেন, যা প্রশাসনিক দুর্বলতার পরিচায়ক। বিআরটিএর ফিটনেস শাখায় দুলালের দালালি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা সাধারণ জনগণের সেবা প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
দুলালের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ট্রান্সপোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল হাকিম এবং সাধারণ সম্পাদক এটিএম শামসুজ্জামান তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন, “সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে সত্য প্রকাশ বন্ধ করা যাবে না। দুলালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
দুলালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এতে করে রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা বজায় থাকবে এবং সাধারণ জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে দুলালের হাইব্রিড রাজনীতি, দালালি এবং সাংবাদিকদের প্রতি হুমকির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।