শেখ হাসিনার বিদেশ ভ্রমণ ও ডক্টরেট ডিগ্রিতে ‘অর্থ অপচয়’ তদন্তে দুদক

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফর এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডক্টরেট ডিগ্রির পেছনে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শত শত কোটি টাকা সরকারি খাতে ব্যয় করার অভিযোগে এই অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।

বিদেশ সফরে বিলাসবহুল খরচের অভিযোগ
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময় সরকারি টাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ভাড়া করতেন এবং বিশাল সফরসঙ্গী দল নিয়ে বিদেশ সফরে যেতেন।

বিশেষ করে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় ব্যয়ের পরিমাণ ছিল বিপুল।

২০১৫ সালে: নিউইয়র্কের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে ২২৭ জনের বিশাল বহর নিয়ে সফর
২০১৪ সালে: ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে ১৭৮ জনের সফরসঙ্গী
২০১৩ সালে: ১৩৪ জন নিয়ে আন্তর্জাতিক সফর

শেখ হাসিনা ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ ব্যবহার করে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন। এককভাবে তিনি প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ব্যয় করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ফিনল্যান্ডে অতিরিক্ত খরচ
২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা হেলসিংকি হয়ে নিউইয়র্ক যাওয়ার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইট বিজি-১৯০২ ব্যবহার করেন। এতে ফিনল্যান্ডে দুই দিনের ল্যান্ডিং চার্জসহ সফরসঙ্গীদের জন্য অতিরিক্ত ৭ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়।

এছাড়া, ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৫০ কোটি টাকা সরকার থেকে পাওনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

‘ভুয়া’ ডক্টরেট ডিগ্রি সংগ্রহে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ের অভিযোগ
শেখ হাসিনার বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া ডক্টরেট ডিগ্রির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দুদক। অভিযোগ রয়েছে, সরকারিভাবে লবিস্ট নিয়োগ করে অর্থ ব্যয় করে তিনি এসব সম্মানসূচক ডিগ্রি সংগ্রহ করেছেন।

উল্লেখযোগ্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় হলো:
ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় (ভারত)
ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় অব ব্রাসেলস (বেলজিয়াম)
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (ভারত)

সরকারি অর্থের ব্যবহার ছাড়াও, জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তির বিনিময়ে তিনি এসব পদক ও ডিগ্রি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

দুদকের তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ
দুদক জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাপক তদন্ত চলছে। যদি কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্যসূত্র: বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।