শুধু একটি ওয়ার্ডেই জ্বালে ত্রিশটি চুল্লি; “গাইবান্ধার সাঘাটায় অবৈধ কয়লা কারখানার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ”

আনোয়ার হোসেন রানা,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটার কামালেরপাড়া ইউনিয়নে অবৈধ কয়লা কারখানা গড়ে ওঠায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। 

ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি অবৈধ কয়লা কারখানা গড়ে উঠলেও শুধুমাত্র ৮ নম্বর ওয়ার্ডেই জ্বলছে বড় বড় ত্রিশটি চুল্লি। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা এসব অবৈধ কয়লা কারখানায় চলছে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করার মহাযজ্ঞ। এর ফলে পরিবেশ,কৃষি এবং সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হুমকির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোন প্রকার বৈধ অনুমোদন ছাড়াই এলাকার কিছু প্রভাবশালীরা এসব অবৈধ কয়লা কারখানা পরিচালনা করছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি অবৈধ কয়লা কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত কালো ধোঁয়া নির্গত হয়ে বাতাস দূষিত করছে। ধোঁয়ার প্রভাবে আশপাশের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং পানির উৎস দূষণের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা-পোড়া এবং চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ,“বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

স্থানীয় কৃষক আবদুল করিম বলেন, “আমাদের ফসল ঠিকমতো হচ্ছে না। কয়লার ধোঁয়ায় জমির ধান ও শাকসবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা পরিবার চালাবো কিভাবে? এই কয়লা কারখানা পুরো এলাকায় বিষ ছড়াচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক,নইলে ভবিষ্যতে বড় বিপদ হবে।”

একই এলাকার বাসিন্দা রাশেদা খাতুন জানান, “দিনরাত ধোঁয়ার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। বাচ্চারা কাশি-শ্বাসকষ্টে ভুগছে। অথচ কারখানার মালিকরা কোনো নিয়ম মানে না।”

এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন,“অবৈধ কয়লা কারখানার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্ত চলছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”

প্রশাসন একাধিকবার অভিযান চালিয়ে এসব কারখানায় ভেঙে দিলেও একেবারে নির্মূল করতে সক্ষম হয়নি। গড়ে উঠেছে আরো নতুন নতুন কারখানা।

কামালেরপাড়ায় গড়ে ওঠা এই অবৈধ কয়লা কারখানাগুলোর জন্য হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ,হুমকির মুখে পড়ছে জনবসতি। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় এই অবৈধ কয়লা কারখানাগুলো দ্রুত বন্ধ করার জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com