আবু বকর ছিদ্দিক, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা): প্রায়শই তিনি কথায় কথায় /বিভিন্ন মঞ্চে বলে থাকেন, আমি পানি ভাতের কুদ্দুইচ্ছে! তাঁর মানে হচ্ছে তিনি তাঁর শিখড় ভুলে যান নি । একটি সময় গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গানের আসর জমাতেন । ঐ সময় আবহমান বাঙালির অন্যতম প্রধান খাবার পানি ভাত খেয়েই আসর শেষ করতে হতো তাঁর ।
যা-ই হোক আবদুল কুদ্দুস বয়াতি মূলত ১৯৪৯ সালের ২২ জানুয়ারি, নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাজীবপুর গ্রামে মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতার মাধ্যমে মাত্র ১১ বছর বয়স থেকে সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন । আর্থিক অনটনে লেখাপড়ার করার সুযোগ হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে কাজের সন্ধানে ঢাকা পাড়ি জমান। এ সময় কিছুদিন আফজাল হোসেনের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে চারণ সঙ্গীতের প্রামাণ্যচিত্রে অভিনয় তালিম নেন।
কদ্দুস বয়াতির দুটি একক অ্যালবামের নাম সোনার নূপুর, আম খায়ো জাম খায়ো তেঁতুল খায়ো না। এছাড়া এছাড়াও অসংখ্য জনপ্রিয়ো বিজ্ঞাপণচিত্র, নাটক ও প্রামাণ্যচিত্রে গান গেয়েছেন তিনি । ব্যক্তিগত জীবনে কুদ্দুস বয়াতি চার ছেলে ও তিন মেয়ের জনক।
কুদ্দুস বয়াতি বাংলাদেশি একজন জনপ্রিয়ো লোকসঙ্গীত শিল্পী । তাঁকে বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশের ‘লোকসঙ্গীতের মহাতারকা’ বলেও সম্বোধন করা হয় । তিনি ১৯৯২ সালে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নির্মিত বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার প্রচারণার অংশ হিসেবে গাওয়া ‘এই দিন, দিন না আরো দিন আছে’ শিরোনামে একটি গানের মাধ্যমে পরিচিতি পান । কোভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাবকালীন ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তিনি জাইনা চলেন, মাইনা চলেন গানে অংশ নেন ।
তাঁর সম্পর্কে সাংবাদিক কোহিনূর আলম বলেন, লোকশিল্পী আবদুল কুদ্দুস বয়াতি কেন্দুয়া তথা সারা দেশের সম্পদ। অনেক পরিশ্রম ও সাধনায় তিনি এ পর্যায়ে পৌঁছেছেন । তাঁর জন্যে শুভকামনা নিরন্তর ।