নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বনানীর ২৭ নম্বর রোড, ৩৭ নম্বর বাড়ির ৫ তলায় অবস্থিত একটি স্পা সেন্টারকে ঘিরে শুরু হয় উত্তাল বিতর্ক ও সাংবাদিকদের অভিযানে ধরা পড়ে চাঞ্চল্যকর দেহব্যবসার চিত্র। জানা যায়, শহিদ নামের এক ব্যক্তি স্পা ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে তরুণীদের দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন। স্পার অবস্থান বনানী কবরস্থানের একদম পাশে—যা স্থানীয়দের মধ্যে নিন্দার ঝড় তোলে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৭ সেপ্টেম্বর রাতে একটি সাংবাদিক দল স্পা সেন্টারে প্রবেশ করে নিজের চোখে দেখে অবৈধ কার্যকলাপের প্রমাণ। ভেতরে তখন কমপক্ষে ২০ জন নারী ছিল এবং শহিদ নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তথ্য প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর সাংবাদিকরা বনানী থানার ওসি রাসেলকে ফোন করে জানান।
পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের প্রশ্নবিদ্ধ করে বলা হয়, “আপনারা কেন আমাদের না জানিয়ে গেছেন?” পরে এক ঘণ্টা বিলম্বে পুলিশ এসে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ততক্ষণে মূল আসামি শহিদসহ আরও অনেকে বেরিয়ে যায় এবং সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ উপরের ফ্লোরে পৌঁছে স্পা থেকে ৮ জন নারী ও ২ জন পুরুষকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। উপস্থিত সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে—কারণ অভিযুক্ত শহিদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের বাহিরে কথা বলতে দেখা গেছে।
সারারাত ধরে থানায় সাংবাদিকদের চাপ ও সামাজিক দায়িত্ববোধের কারণে অবশেষে ওসি রাসেল সকালে নিশ্চিত করেন—শহিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আটককৃতদের কোর্টে পাঠানো হয়েছে। তবে মূল হোতা শহিদ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সাংবাদিক সমাজ মনে করে, শহিদকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হলে পুলিশের এই অভিযানের কোনো অর্থ থাকবে না। পাশাপাশি তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভবিষ্যতে কবরস্থানের পাশে এমন স্পা ব্যবসার নামে চলা অসামাজিক কাজ যেন না হয়, তার জন্য পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ ও দরখাস্ত পেশ করবে।
এটি শুধু একটি স্পা সেন্টার নিয়ে ঘটনা নয়—এটি একটি সামাজিক ব্যাধির প্রতিফলন, যেখানে অসাধু চক্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরব ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। এখন দেখার পালা—পুলিশ এই ঘটনায় কতটা স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা দেখায়।