চ্যানেল7বিডি ডেক্স: নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং জনজীবনে স্বস্তি আনতে রাজধানীর ছয়টি স্থানে ‘জনতার বাজার’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। এই ন্যায্যমূল্যের বাজারগুলো বসানো হবে কামরাঙ্গীরচরের কুড়ারঘাট মেডিকেল মোড়, মোহাম্মদপুর, গুলশান, মিরপুর, বাড্ডা, এবং ডেমরায়।
শনিবার কামরাঙ্গীরচরে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। তিনি বলেন, জনতার বাজারের মাধ্যমে সরাসরি কৃষক ও ভোক্তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হবে, যাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমে এবং পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
জনতার বাজার: কীভাবে কাজ করবে?
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ বাজারে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজি এবং অন্যান্য নিত্যপণ্য সাশ্রয়ী দামে সরবরাহ করা হবে। পণ্য কেনার জন্য নির্ধারিত মূল্যতালিকা অনুসরণ করা হবে। ক্রেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা পরিশোধের পর একটি কোড পাবেন, যা দেখিয়ে তারা পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
সরকারি জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করে স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, এবং বেকার যুবকদের এই বাজার ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করা হবে।
মূল লক্ষ্য এবং সাফল্য
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, সরাসরি কৃষক ও উৎপাদকদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করায় পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত হবে এবং দাম কমবে। এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই দেশের অন্যান্য জেলায় ভালো সাড়া ফেলেছে। ফলে আশপাশের বাজারগুলোতেও পণ্যের দাম কমেছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, “মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমানোর মাধ্যমে পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে জনতার বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই বাজারে কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহযোগিতা করবে।”
চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা
অনেক এলাকাবাসী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি এবং কার্যকর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা আরও দাবি করেছেন, বাজার যেন শুধুমাত্র নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য না থেকে সব শ্রেণির মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে।
এদিকে, গুলশানের মতো উচ্চবিত্তের এলাকায় ন্যায্যমূল্যের বাজার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে বাজারের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং রাজধানীর আরও এলাকাকে এর আওতায় আনা হবে।
পরিকল্পিত স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তি ব্যবহার
জানা গেছে, প্রতিটি পণ্যের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ ও যৌক্তিক মুনাফা যোগ করা হবে। এছাড়া চাষি ও খামারিরাও সরাসরি তাদের পণ্য এনে বিক্রি করতে পারবেন। বাজার ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতার জন্য একটি সফটওয়্যার নির্মাণ করা হবে, যার মাধ্যমে ক্রয় ও বিক্রয় কার্যক্রম অনলাইনে দেখা যাবে।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগে সাধারণ মানুষ খুশি। তবে তারা বাজার পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং সাশ্রয়ী পণ্য সরবরাহে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।