মহাসপ্তমী উদযাপিত: আগামীকাল অষ্টমী ও কুমারী পূজা

বাসস: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আজ সোমবার ছিল মহাসপ্তমী। আগামীকাল মঙ্গলবার মহাষ্টমী। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। অষ্টমী পূজার মূল আকর্ষণই হলো কুমারী পূজা। এদিন ফুল, জল, বেলপাতা, ধূপ-দীপসহ ষোড়শ উপচারে কুমারীরূপে দেবী দুর্গারই আরাধনা করা হয়।

রাজধানীসহ সারাদেশে আজ হিন্দুধর্মাবলম্বীরা পূজামণ্ডপগুলোতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মহাসপ্তমী উদযাপন করেছেন। দুর্গাভক্তরা দেবীর আরাধনায় পূজামণ্ডপগুলোতে দিনভর ভিড় জমিয়েছেন।

সপ্তমীর সকালে পূজার শুরুতেই দেবী দুর্গার প্রতিবিম্ব আয়নায় ফেলে বিশেষ ধর্মীয় রীতিতে স্নান করানো হয়। এরপর করা হয় নবপত্রিকা স্থাপন। নবপত্রিকার আরেক নাম কলাবৌ স্নান। এছাড়া দেবীর চক্ষুদানের মাধ্যমে দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পূজা শেষে হাতের মুঠোয় ফুল, বেলপাতা নিয়ে ভক্তরা মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে এবারের পূজার প্রথম অঞ্জলি দেন দেবীর পায়ে। করজোড়ে কাতর কণ্ঠে জগজ্জননীর কাছে শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন ভক্তরা। ঢাকের বাদ্য, কাঁসর ঘণ্টা কিংবা শঙ্খধ্বনিতে দেবীর আরাধনার পাশাপাশি সবেতেই যেন ছিল একই আর্তি।

মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ২ অক্টোবর দুর্গোৎসব শেষ হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।

এ বছরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

পূজামণ্ডপগুলোতে আনসার, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। 

রাজধানীতে কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।

এ বছর দেবী দুর্গার গজে (হাতি) আগমন এবং দোলায় (পালকি) গমন হবে। গজে দেবীর আগমনকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়, যা শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরার প্রতীক। অন্যদিকে, দোলায় গমন মহামারি বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে, যা একটি অশুভ সংকেত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com