মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন আগামীকাল

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল (২৫ জানুয়ারি) উদযাপিত হবে। বাংলা ভাষার প্রথম আধুনিক কবি হিসেবে খ্যাত মধুসূদন দত্তের জন্ম হয়েছিল ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি, যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে।

মধুমেলার আয়োজন
মহাকবির স্মরণে ১৯৭৩ সাল থেকে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছরও যশোরের সাগরদাঁড়িতে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে মেলার আয়োজন শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার।

প্রধান উপদেষ্টার বাণী
মহাকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একটি বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যের এক ক্ষণজন্মা প্রতিভা। তিনি বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূচনা করেন এবং তাঁর সৃষ্টি বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “মহাকবির সাহিত্যকর্ম পরবর্তী প্রজন্মের জন্য প্রেরণার উৎস। তাঁর স্বদেশ প্রেম আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে সহায়তা করে।

মাইকেল মধুসূদনের জীবন ও কর্ম
মাইকেল মধুসূদন দত্তের পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত এবং মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। শৈশবে তিনি শেখপুরা গ্রামের মৌলভী খন্দকার মখমল সাহেবের কাছে বাংলা ও ফার্সি শিখেন।

১৮৩৩ সালে তিনি কলকাতায় যান এবং লালবাজার গ্রামার স্কুলে ইংরেজি, ল্যাটিন ও হিব্রু ভাষা শেখেন। ১৮৪২ সালে হিন্দু কলেজে অধ্যয়নকালে ‘স্ত্রী শিক্ষা’ বিষয়ে প্রবন্ধ লিখে স্বর্ণপদক লাভ করেন।

১৮৪৩ সালে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন এবং কলকাতা থেকে মাদ্রাজে চলে যান। সেখানে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন এবং ইংরেজি কবিতা ও সাংবাদিকতায় যুক্ত হন।
বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান

মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের জন্য বিখ্যাত। তাঁর রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য‘ বাংলা সাহিত্যের একটি অমর সৃষ্টি। এছাড়াও তিনি ‘শর্মিষ্ঠা,’ ‘পদ্মাবতী,’ ‘তিলোত্তমাসম্ভব,’ এবং ‘চতুর্দ্দশপদী কবিতাবলী‘ রচনা করেন।

শেষ জীবন ও মৃত্যু
অর্থসংকটের কারণে মহাকবির জীবনের শেষ সময় খুবই কষ্টে কাটে। ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

উপসংহার
মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার জন্য অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। এবারের ২০১তম জন্মবার্ষিকীতে দেশজুড়ে এই মহাকবিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করা হবে।

তথ্যসূত্র: বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।