ভারতে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কড়া প্রতিবাদ

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে জানান, “ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার অনুপস্থিত থাকায়, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারকে তলব করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করা হয়েছে।

বাংলাদেশের কূটনৈতিক পদক্ষেপ
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ আগেও শেখ হাসিনাকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল, তবে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তিনি জানান, “আজ আবারও ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পবন বাধের মাধ্যমে আমাদের আপত্তি জানানো হয়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করব, ভারত এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

শেখ হাসিনার মন্তব্যে ক্ষোভ
শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যকে “অত্যন্ত আক্রমণাত্মক” উল্লেখ করে হোসেন বলেন, “এটি তরুণ প্রজন্মের অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এবং সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত লাগায় এবং দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।

ভারতের প্রতিক্রিয়া ও আগের চুক্তি পর্যালোচনা
ভারত সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পূর্ববর্তী চুক্তিগুলো পর্যালোচনার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, “আদানির সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তিটি বাংলাদেশের সর্বোত্তম স্বার্থে হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ভারত দাবি করেছে তারা শেখ হাসিনাকে “অনলাইনে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য কোনও প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে না।” তবে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ধানমন্ডি ৩২-এর ঘটনা
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে হোসেন বলেন, “ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভাঙচুরের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আশা করা হচ্ছে, তবে আমরা এটিকে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছি।

বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ক্রমাগত “মিথ্যা, বানোয়াট ও উসকানিমূলক” বক্তব্য ছড়িয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “এই ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ সরকারের জন্য শত্রুতামূলক আচরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এটি দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পথে বাধা সৃষ্টি করছে।

বাংলাদেশ সরকার ভারতকে “পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের” আহ্বান জানিয়েছে, যাতে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থানকালে “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য না দিতে পারেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেন নিশ্চিত করেছেন, “ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে বাংলাদেশ সরকার আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।”

তথ্যসূত্র: বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।