চ্যানেল7বিডি ডেক্স: পতিত সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, কমেছে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান ও মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে নীতিনির্ধারণী বৈঠক শেষে শফিকুল আলম বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থনীতির মূল সূচকগুলো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে, যা সাম্প্রতিক সময়ে বড় ইতিবাচক অগ্রগতি।
অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও নীতিগত উদ্যোগ
🔹 বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য: তিন বছর পর প্রথমবারের মতো উদ্বৃত্ত হয়েছে।
🔹 খাদ্য নিরাপত্তা: নয় লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হচ্ছে, বর্তমানে ১৩ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রয়েছে।
🔹 বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিদিন ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা ২০২৮ সালের মধ্যে ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হবে।
🔹 মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: টাকা ছাপানো বন্ধ রয়েছে, কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে, নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক ছাড় অব্যাহত রয়েছে। এক কোটি পরিবার ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য পাচ্ছে।
কোরিয়ান ইপিজেড ও বিনিয়োগ সমস্যার সমাধান
দীর্ঘদিন ধরে জমি জটিলতার কারণে কোরিয়ান ইপিজেড বিনিয়োগে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল। সরকার ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার পর বিনিয়োগে আর কোনো বাধা নেই। এতে কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
জিডিপি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) প্রবৃদ্ধি ৪.২২% হয়েছে, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার (৫.৮%) তুলনায় কম। তবে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২,৭৩৮ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
প্রেস সচিব বলেন, গত পাঁচ বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে খুনের ঘটনা কমেছে। ৫-৮ আগস্টের মধ্যে যারা বিদেশে পালিয়েছে, তারা তখনকার রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়েছে। বর্তমানে তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
সামনের লক্ষ্য ও করণীয়
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান বৈঠকে অর্থনীতির সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
সংক্ষেপে: অর্থনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন অব্যাহত রাখতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি হ্রাস, রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বাসস