বাগমারায় এক চক্রের জুলুম নির্যাতনে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

রাজশাহী থেকে হাবিব জুয়েল :: রাজশাহী বাগমারার সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এখন ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজের নাম। জিরো থেকে হিরো এবং অল্প সময়ে আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে ওঠা কে এই ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ। ২০২১ সালে দিনমজুর ও পরে অটোরিক্সা চালক থেকে ঋণের দায়ে ঢাকা পলাতক ছিলেন ফিরোজ। তবে ২০২২ সালে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম হয়ে আছেন এই ক্যাসিনো ফিরোজ। 

কমপক্ষে অর্ধশত পত্রিকায় সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ, তবে ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ পরবর্তীতে তার ভায়রা বাগমারা ১২নং ঝিকড়া ইউপি’র পিরুলীসেন পাড়া গ্রামের মৃত জব্বার আলীর পুত্র সর্বহারার গ্রুপ লিডার শহিদকে একটি গাড়ি উপহার দেয়। যার ফলে ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজের তৈরী হয় একটি সন্ত্রাসী বলয়। এদিকে অবৈধ টাকাকে বৈধ রুপ দেওয়ার জন্য টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদের প্রধান ও অন্যতম সহযোগী হয়ে যান ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ ও সর্বহারা গ্রুপের লিডার শহীদ।

তবে ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ ও সর্বহারা গ্রুপের লিডার শহীদ কর্তৃক অত্যাচারিত স্থানীয় এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী দফতরসহ প্রশাসনিক সকল দপ্তরে ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ ও সর্বহারা গ্রুপের লিডার শহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তবে সব কিছুই রফাদফা হয়েছে টাকার বিনিময়ে । এর ফলে তারা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে যায়। 

অন্যদিকে ক্যাসিনো ফিরোজ ও সর্বহারা শহীদ ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট ভবানীগন্জ বাজারে ছাএ-জনতার উপর হামলা করে। গণঅভ্যুত্থানের পর গা ঢাকা দিয়ে ঢাকাতে আত্মগোপন করে কিছু দিন পরে স্থানীয় আমির চক্রকে টাকা দিয়ে এলাকায় আসে সর্বহারা শহিদ। 

এরপরে যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় আবার গা ঢাকা দেয় সর্বহারার লিডার শহীদ। কিছুদিন পরে এলাকায় এসে আমির চক্রের সহিত টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে গত রোজার ঈদে। ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজকে নিয়ে আসেন এলাকায় এমনকি বডিগার্ড হিসেবেও কাজ করে এই চক্র। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহী বাগমারা উপজেলার ১২ নং ঝিকরা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা তারেক জিয়া প্রজন্নের সদস্যপদে থাকা এবং বাগমারা থানা এলাকার গরু চোরের সক্রিয় অন্যতম সদস্য আমির চক্রের ক্ষমতার দাপটে এখনো বহাল রয়েছেন এই ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ ও সর্বহারার লিডার শহীদ চক্র । 

তবে অনুসন্ধানে আরোও জানা গেছে ২০০৪ সালের ঘটনা দেখিয়ে ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগের আমলে আওয়ামীলীগের সুনজরে থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম সহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল এই আমির চক্রটি ।

তবে সুগভীর অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা তারেক জিয়া প্রজন্ম দলের সদস্য আমিরের বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় গরু চোরের তালিকায় ১ নং নাম আমির চোরা ও তার ছেলে সোহাগ । এলাকায় চাঁদাবাজি, চুরি, মোটরসাইকেল চুরি, ছিনতাই, মানুষ খুন, জমি দখলসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। 

স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামীগের ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ অনলাইন প্রতারণামুলক এপস ‘এমটিএফই ’ এর মাধ্যমে বাগমারার কালীগন্জ বাজার সহ পুরো রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার যুব সমাজের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

কিন্তু সে সময় আওয়ালীগের ছত্র ছায়াই থাকায় কেই প্রাণ ভয়ে কেই মুখ খুলতে পারেনি। এই চক্রের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে চাঁদাবাজী, হত্যা সহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এমনকি কিছু মামলা টাকার বিনিময়ে বাদীকে ম্যানেজ করে মিমাংসা করেছে বলেও প্রমান পাওয়া যায়। এছাড়া ভুক্তভোগীগন টাকা ফেরত চাইলে প্রান নাশের হুমকি দেয় এই চক্র। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই প্রতারণার টাকা ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজের কাছে প্রতারিত হওয়া টাকা ফেরত চাইলে টাকা দিতে অস্বীকার করেছেন বলে তথ্য প্রমান পাওয়া যায়।  

বর্তমানে এই আমির চক্রটি ঝিকরা ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট বাজার, অটো-টেম্পু স্ট্যান্ড, অবৈধ টোল, অবৈধ পুকুর খনন সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে এবং ৫ আগষ্টের দিন থেকে কালীগঞ্জ বাজারে ১০০ টি দোকান থাকলে ৯৫ টি দোকান থেকে চাঁদা নিয়েছে এবং সাধারণ মানুষের বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে দিবে, পুকুরে, দিঘিতে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বিভিন্ন ব্যাক্তির কাছে চাঁদা নিয়েছে বলে গোপন অনুসন্ধানে জানা যায় । 

ভাড়াটিয়া খুনি হিসেবে পরিচিত এই চক্রটির বিরুদ্ধে সহজে মুখ খুলতে চান না এলাকাবাসী। কেননা এদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলেই নেমে আসে তার ওপর ভয়াবহ দুর্ভোগ। এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই অভিযোগকারীর উপরে হামলা করা হয় কিংবা কখনো কখনো মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দেওয়া হয় এমনকি প্রকাশ্য দিবালোকেও ইজ্জত হরন করেন, এদের বিভিন্ন অপকর্মের পেছনে রয়েছে ক্যাসিনো সম্রাট ফিরোজ ও সর্বহারা শহিদ চক্রের হাত এমনকি অবৈধ অর্থের জোগান ও দেন এই চক্র, স্হানীয় এলাকার শিক্ষক সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকেও ইতিপূর্বে বিভিন্ন ভাবে মারধর ও হয়রানির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু আমির চক্রের কারনে মান সম্মানের ভয়ে কেই প্রাকাশ্য মুখ খুলছে না ।

তবে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই চক্রের সাথে ফ্যাসিস্ট সরকারের সখ্যতার প্রমাণ রয়েছে খোদ ফেসবুকে। যদিও বর্তমানে ফেসবুক থেকে এই চক্রটি ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ছবি হাইড করে দিয়েছে তারপরেও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ছবিগুলোকে বের করা সম্ভব হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com