ফখরুল: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে

অনলাইন ডেক্স: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতান্ত্রিক নীতির আওতায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত দেশের জনগণই নেবে।

তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি, জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা বারবার বলেছি, আমরা উদার গণতান্ত্রিক দল। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রের নীতি ও অনুশীলনে বিশ্বাস করি এবং সেগুলো মেনে চলি। অতীতেও আমরা তাই করেছি।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের অনুরোধের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, এমন অনুরোধের পরও, বিএনপি কোনো দলের নিষেধাজ্ঞার পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা বা কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি আমাদের দায়িত্ব নয়। এটা জনগণের ব্যাপার, তারা যেভাবে চায়, সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমরা আগেই বলেছি, জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা এর পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলছি না। এটা জনগণের ব্যাপার।

এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো ২০২৪ সালের ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিক্ষোভ দমনে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বড় আকারের অভিযানের নির্দেশনা দেন, যার ফলে বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করা হয় এবং অনেককে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়। তবে, বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষার জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করার সুপারিশ করা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের পক্ষ থেকে।

ফখরুলের আপত্তি: আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ও স্থানীয় নির্বাচন
ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির তীব্র বিরোধী। তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের নির্বাচন সমর্থন করব না, কারণ দেশের জনগণ এতে অভ্যস্ত নয়। এ ধরনের প্রশ্ন ওঠানো উচিত নয়।

তিনি স্থানীয় নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, আমরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছি। এটা দেশের রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও ভঙ্গুর করবে।

জাতীয় নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ
ফখরুল বলেন, যত দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তত দ্রুত রাজনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রশাসন গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন। একবার সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে অর্থনীতি উন্নতি করবে, এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের পরিস্থিতি সুষ্ঠু হবে।

ফখরুল বলেন, এখনো বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো সঠিকভাবে চলেনি। নির্বাচিত সরকার না থাকলে এসব সমস্যা সমাধান করা কঠিন হবে। আমরা বর্তমানে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে আছি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভবিষ্যৎ
এক প্রশ্নের জবাবে, ফখরুল বলেন, তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে অবিশ্বস্ত। তবে, তিনি জানান, সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে বলে তাদের জানানো হয়েছে।

তথসূত্র: ইউএনবি নিউজ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।