ঢাকা, ১০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : চব্বিশের জুলাই আন্দোলন দমন করতে শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের আদেশ দিয়েছিলেন। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে বিবিসি। এমনটাই জানিয়েছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)’র ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, গতকাল বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস The Battle for Bangladesh: Fall of Sheikh Hasina শিরোনামে প্রচারিত একটি ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনার একটি কথোপকথনের অডিও প্রকাশ করা হয়। ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছে এবং ‘তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই আন্দোলনকারীদের পাবে, গুলি করবে’ মর্মে আদেশ দিয়েছে। বিবিসি নিজস্ব অনুসন্ধানে রেকর্ডিংটির সত্যতা যাচাই করেছে।
বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, এই ডকুমেন্টারির এক অংশে আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার কি না, তা নিশ্চিত নই’—এই বক্তব্যটিকে অনেকে বিভ্রান্তিকরভাবে বিবিসি’র অবস্থান হিসেবে প্রচার করছেন, যা সঠিক নয়।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, এটি স্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের ওই মুখপাত্রের বক্তব্য, বিবিসি’র নয়।
ডকুমেন্টারির শেষদিকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্রের বক্তব্য নেয়া হয়। ৩৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ড থেকে ৩৫ মিনিট ৬ সেকেন্ড পর্যন্ত সেখানে আওয়ামী লীগের ওই মুখপাত্রের বক্তব্য স্ক্রীন টেক্সট আকারে দেখানো হয়। সেই মুখপাত্র তার বক্তব্যের এক অংশে বলেছিলেন, ‘We cannot confirm whether the tape recording referenced by the BBC is authentic, but in any case it does not demonstrate any unlawful intention on the part of Sheikh Hasina.’ অনেকেই স্ক্রিনে থাকা এই টেক্সটকে বিবিসি’র বক্তব্য হিসেবে প্রচার করে বলতে চাচ্ছেন যে ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি ভেরিফায়েড নয়। যদিও ডকুমেন্টারিতে ওই মুখপাত্রের পুরো বক্তব্যের আগে ‘An Awami League Spokesperson told us’ লেখা ছিল।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, বাস্তবতা হলো, বিবিসি এটিকে যাচাই করেছে এবং সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ডকুমেন্টারিটি নিয়ে বিবিসি বাংলা অনলাইন ‘বিবিসির অনুসন্ধানে ৫ই আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশি হত্যাকাণ্ডের যে চিত্র উঠে এসেছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে লেখা আছে, ‘১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়েও এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে এবং তারা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পায়নি।’
ডকুমেন্টারিতে দেখানো আওয়ামী লীগ মুখপাত্রের বক্তব্যকে বিবিসির বক্তব্য হিসেবে দেখানোর কোনো সুযোগ নেই বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাফ্যাক্ট।