জেলা প্রতিনিধি: গতকাল ১০ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত কাজল মাজমাদারের অপরাধের ‘মজমা’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক কাজল মাজমাদার।
তিনি এক প্রতিবাদ লিপিতে বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে আমি জেলা বিএনপির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি। স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের ১৭ বছরের শাষনামলে বিএনপির দলীয় কর্মকান্ড থেকে আমাকে দুরে রাখতে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করতে উঠে পড়ে লাগে আওয়ামীলীগের দোসররা। বাধ্য হয়ে আমি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থাকাকালীন বিএনপির কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা ভিত্তিক সকল কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করি। স্বৈরাশাসক হাসিনার শাসনামলে জেলা বিএনপির যেকোন কর্মসূচী ঘোষনা করা হলেই আমার বাড়িতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দলকে পাঠিয়ে হয়রানী করা হতো। তারপরও আমি দলীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করতে পিছপা হয়নি। দলকে সুসংগঠিক করতে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে গেছি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয়ের ১০ দিন পূর্ব থেকে আন্দোলনকে বেগবান করতে কুষ্টিয়ায় অবস্থান করার পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে গেছি আমি। এসময়কালে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীরা এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নানা ভাবে হয়রানী করেছে। জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন সৈনিকের পাশাপাশি আমি একজন সফল ব্যবসায়ীও। আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে আমাকে ব্যবসায়ীক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে। আমি একজন প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার। সরকারী সকল নিয়ম কানুন মেনে বিভিন্ন দপ্তরে দরপত্রে অংশগ্রহণ করে থাকি। একটি মহল আমাকে সামাজিক ও ব্যবসায়িক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে এবং মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে ‘সম্প্রতি ঘোষিত বিএনপির কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে বিতর্কিত করার জন্য কাজল মাজমাদার উঠে পড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে’। এখানে অভিযোগের কথা বলা হলেও কার কাছে এমন অভিযোগ রয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। ফলে প্রতিয়মান হয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে কোনো প্রকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই প্রতিবেদকের মনগড়া তথ্যে প্রতিবেদনটি তৈরী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, ‘৫ আগস্টের পর থেকে তার নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার সরকারি আমলা, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, ঠিকাদার, ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছে।’ প্রতিবেদনে এমন ঢালাও অভিযোগ আনা হলেও কোনো ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কিন্তু প্রতিবেদনের শেষ অংশে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদের যে বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে উনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে প্রতিবেদনে উল্লেখিত আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পুলিশের কাছে নেই। তাছাড়া এহেন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
অতএব এই সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই প্রতিবেদকের মনগড়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি এই প্রতিবেদনে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের যে অপচেষ্টা স্পষ্টত প্রকাশ পেয়েছে তারও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।