পুলিশের মনোবল ফেরাতে থানায় থানায় মতবিনিময় সভা

অনলাইন ডেক্স: গণ-অভ্যুত্থানের পর পুলিশের মাঠপর্যায়ের সদস্যদের মধ্যে দেখা দেওয়া আতঙ্ক ও অস্থিরতা এখন কিছুটা কমলেও তাদের মনোবল পুরোপুরি ফিরে আসেনি। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢাকার থানাগুলোতে নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এসব সভায় স্থানীয়দের পরামর্শ শোনা ও তাদের সহযোগিতায় পুলিশের কার্যক্রম আরও কার্যকর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।

নাগরিকদের মতামত গ্রহণ: ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পরে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। তবে মনোবল পুরোপুরি ফেরাতে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকাবাসীর মতামত নিয়ে পুলিশি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

থানাভিত্তিক কার্যক্রম: ডিএমপির বিভিন্ন থানা এলাকায় মতবিনিময় সভায় স্থানীয় নাগরিকদের চাওয়া-পাওয়া শোনার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সভাগুলোতে নাগরিকদের সহযোগিতার মাধ্যমে স্থানীয় সমস্যাগুলো চিহ্নিত ও সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পুলিশের কাজ আরও ফলপ্রসূ করতে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ উদ্যোগ পুলিশের মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি অপরাধ দমনেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, “নাগরিকদের কাছ থেকে সরাসরি তথ্য পেলে পুলিশ সহজেই অপরাধ চিহ্নিত করতে পারবে। স্থানীয় সমস্যা, যেমন ছিনতাই, ইভটিজিং বা মাদক ব্যবসার মতো বিষয়ে নাগরিকদের সহযোগিতায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।”

আইজিপির উদ্যোগ: পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, পুলিশের মনোবল ফেরানো তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জনগণের বন্ধু হিসেবে পুলিশ যাতে তাদের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।

আইজিপির বক্তব্য অনুসারে, পুলিশে যারা নিরপরাধ, তাদের কাজের সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে যেসব সদস্য অপরাধে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

মনোবল পুনরুদ্ধার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ: বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুলিশের অভ্যন্তরীণ সুশাসন নিশ্চিত করা, জনগণকে সঠিকভাবে অবহিত করা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করা হলে পুলিশ বাহিনী তাদের দায়িত্ব আরও দক্ষতার সঙ্গে পালন করতে পারবে।

গঠনমূলক পরিবর্তনের আশা:

ডিএমপির ৫০টি থানা এলাকায় এ ধরনের মতবিনিময় সভার আয়োজন চলমান। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নাগরিকদের সঙ্গে এই ধরনের যোগাযোগ পুলিশের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং অপরাধ দমনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।