অনলাইন ডেক্স: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন থেকে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়া গণজাগরণে আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়নের তদন্তে জাতিসংঘের একটি তথ্যানুসন্ধান দল কাজ করেছে। তবে পুলিশের প্রতিবেদন না পাওয়ায় জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ পায়নি।
জাতিসংঘের তদন্ত দল মাঠপর্যায়ে কাজ শেষে ২০২৪ সালে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট একটি সংস্থার প্রতিবেদন না পাওয়ায় এটি বিলম্বিত হয়েছে।
সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই) এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিবেদন অনেক আগেই জাতিসংঘে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশের প্রতিবেদন এখনও অনুপস্থিত। সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতিবেদন দ্রুত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এরপর জুলাই-আগস্টের সহিংসতার তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের কাছে চিঠি পাঠান প্রধান উপদেষ্টা।
২২ থেকে ২৯ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্যের একটি অগ্রবর্তী দল বাংলাদেশ সফর করে। পরে একটি দল এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫টি বিষয়ের ওপর তথ্য সংগ্রহ করে।
তদন্ত প্রতিবেদন ২০২৪ সালের নভেম্বরের মধ্যে জমা দেয়ার কথা থাকলেও ডিসেম্বরে জমা দেয়ার আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা। তবে পুলিশের প্রতিবেদন না পাওয়ায় এটি বিলম্বিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, পুলিশের প্রতিবেদন ছাড়া জাতিসংঘে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠানো সম্ভব নয়। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও এখনো পুলিশ তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি।
সরকারের একটি সূত্র জানায়, পুলিশের প্রতিবেদন পেলে জানুয়ারির শেষের দিকে জাতিসংঘে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে একাধিকবার চিঠি দিয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে তাগিদ দিয়েছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমি আশা করি জানুয়ারির মধ্যে সব রিপোর্ট পেয়ে যাব।“
জাতিসংঘের দল ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরসহ আটটি বিভাগীয় শহর পরিদর্শন করে সহিংসতার শিকার ব্যক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য নিয়েছে। তারা সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় তথ্য সংগ্রহ করেছে।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের প্রতিবেদন তৈরিতে পুলিশের প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং এটি পেলে জাতিসংঘ দ্রুত তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারবে।