ইউএনবি নিউজ: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান টাকা গণনার পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে পাগলা মসজিদের ১১টি লোহার দানবাক্স থেকে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এবার ৪ মাস ১২ দিন পর শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় ১১টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়।
এ সময় মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ প্রায় ৪০১ জনের একটি দল টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন। টাকার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গহনাও পাওয়া গেছে দানবাক্সগুলোতে।
ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এছাড়াও বিপুলসংখ্যক সেনা সদস্য, পুলিশ ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ফৌজিয়া খান বলেন, ‘গণনা শেষে সব টাকা রূপালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। আর দানবাক্স থেকে পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারগুলো জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে গচ্ছিত রাখা হয়েছে। জেলা শহরের নরসুন্দা নদীতীরের ঐতিহাসিক এ মসজিদে লোহার দানসিন্দুকগুলো তিন থেকে চার মাস পরপর খোলা হয়।
পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত তিন থেকে চার মাস পরপর দানবাক্স খোলা হয়। এবার গতবারের তুলনায় কিছু দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছে। এবারও রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে। প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মসজিদের মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ শুরু করা হয়।
ফৌজিয়া খান বলেন, ‘পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়ে থাকে।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন। গণনার দিন ছাড়াও বাকি দিনগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন সিন্দুকের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।’
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি স্থাপিত। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে আশাই দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার দান করেন।