ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : জনগণের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা কি সত্যি সত্যি পরিবর্তন চান, নাকি আবারও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৌকায় ফিরে যেতে চান ? যদি না চান তাহলে কিন্তু ৫ আগস্টের মতো আবার ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামতে হবে ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য, ভাতের অধিকার ও ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য, সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার জন্য।সত্যি সত্যি পরিবর্তন চাইলে, সংস্কার চাইলে আবারও ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত শীবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিন একথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা এর আগে ১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাসের সারমর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন।মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে অনেকেই ৭১ সালের যুদ্ধের কথা বলতে পারবে না। আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছি- আমাদের একটা স্বাধীন দেশ পাবো। পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর আর অত্যাচার করতে পারবে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম যুদ্ধ করে। লাখ লাখ মানুষ সেখানে শহীদ হয়েছিলো। আমরা হিন্দু-মুসলমান ভাইয়েরা ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছিলাম। আমরা সেগুলো ভুলিনি। আমাদের বাড়িঘর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী লুট করে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর স্বাধীন হলাম যুদ্ধ করে। একটা দেশ পেলাম- স্বাধীন বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আমাদের আশা ছিলো, ভরসা ছিলো যে শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের বড় নেতা। তিনি পাকিস্তান থেকে এসে আমাদেরকে একটা সুন্দর শান্তির দেশ দেবেন, যেখানে পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে বাঁচবো। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের! আমরা সেটা পাইনি। স্বাধীনতার পর থেকেই শুরু হয়ে গেছে এদেশে হানাহানি-কাটাকাটি, খুন জখম, হিংসা। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, যে নেতাকে (শেখ মুজিব) এত মানুষ ভালোবাসলো, যে দলটাকে (আওয়ামী লীগ) এতো মানুষ ভালোবাসলো, সেই দলটাই এ দেশের মানুষের ওপর চড়াও হয়ে গেল।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আমরা লড়াই-সংগ্রাম করছি। পরিবর্তন এমনই এমনই হয়ে যায় নাই। এ দেশটা আমাদের সবার। সংস্কার বিষয়ে মির্জা ফখরুল জনসভায় আগতদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমি বুঝতে চাই সংস্কার কী ? আপনারা জানেন ? আমাকে জানাতে হবে। আমি বুঝি না সংস্কার কী ? ‘আমি সংস্কার বলতে এটুকু বুঝি যে আমার একটা পরিবর্তন লাগবে। পরিবর্তনটা কী ? আমার ভোটটা যেন আমি নিজে দিতে পারি- এটা নিশ্চিত করতে হবে। আর পার্লামেন্টে যেন আমাদের কথাটা আলোচনা হয়। কৃষক ন্যায্য দাম পায়, শ্রমিক যেন ন্যায্য মজুরি পায়। আমরা দিনের শেষে একটু শান্তিতে ঘুমাতে চাই।
জনগণের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা কি সত্যি সত্যি পরিবর্তন চান, নাকি আবারও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৌকায় ফিরে যেতে চান ? যদি না চান তাহলে কিন্তু যেমন ৫ আগস্ট ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন, আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামতে হবে ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য, ভাতের অধিকার এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য, সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার জন্য। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কেউ যদি বলে যে এ দেশে সাম্প্রদায়িকতা হচ্ছে, আমরা তা মানতে রাজি নই। কারণ আমরা সবাই একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকি। জনসভায় বিএনপির জেলা ও উপজেলা সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।