পরকীয়ার ঘর ছাড়লেন মা অযত্নে অবহেলায় কোলের শিশু 

এবিএম কাইয়ুম রাজ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার উত্তর আটুলিয়ায় পরকীয়ার জেরে এক বছরের এক শিশুর মানবেতর জীবনযাপনের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। শিশু পুত্রকে রেখে মা আফিয়া সুলতানা সৌদি প্রবাসী মহাজনপুর আইতলা গ্রামের মোঃ দবির সরদারের পুত্র আরাফাত হোসেনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন বলে দাবি করেছেন শিশুটির পিতা মোস্তফা মামুনুর রশিদ।

ভুক্তভোগী মামুনুর রশিদ জানান, ২০২৩ সালের ১৫ মে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক কালিগঞ্জের হোমিওপ্যাথি ডাক্তার আজিজুল হকের মেয়ে আফিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ২৬ এপ্রিল তাদের ঘরে একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।

অভিযোগ অনুযায়ী, আফিয়া ‘বাবার বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন’ বলে সন্তানসহ নিজ বাড়ি থেকে ছোট ভাই আসাদুল্লাহ হক ফয়সালের সাথে চলে যান এবং পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি সৌদি প্রবাসী আশাশুনি উপজেলার কুল্ল্যা ইউনিয়নের মহাজনপুর আইতলা গ্রামের মোঃ দবির সরদারের পুত্র আরাফাত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং তার সঙ্গেই গোপনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এ সময় তিনি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্রও নিয়ে যান।

তথ্যসুত্র জানায়, ৭নং মুন্সিগন্জ ইউনিয়নের নিকাহ ও বিাবাহ রেজিঃ কার্যলয়ে মাওঃ নেছার আলী অবৈধভাবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ২০২৫ সালের ১৬ মার্চ ডাকযোগে (রেজি. নং: আর-০৭৩) একটি তালাকনামা পাঠানো হয়, যেখানে তালাকের তারিখ দেখানো হয়েছে ১০ জানুয়ারি। তালাকের মাত্র দুই মাসের মাথায় আফিয়া সুলতানাকে বধূ হিসেবে ঘরে তুলে নেন আরাফাত হোসেন। অভিযোগ রয়েছে, কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলার নিকাহ রেজিস্ট্রার আরিফ বিল্লাহ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই বিবাহ সম্পন্ন করেন। এ ব্যাপারে শিশুর পিতা মোবাইলে আরিফ বিল্ল্যাহ সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিবাহের সত্যতা স্বীকার করেন।

বর্তমানে শিশুটি তার নানাবাড়ি রায়পুর মোড়লবাড়ি গ্রামে অবহেলায় জীবনযাপন করছে। এমনকি তাকে খেলনার চেয়ারে বেল্ট দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শারীরিক ও মানসিক অবসাদে ভুগছে বলে জানান তার নিকটজনেরা।

শিশুর মা আফিয়া ও নানা ডাক্তার আজিজুল হক সন্তানের দুর্দশার বিষয়টি স্বীকার করলেও নতুন স্বামী আরাফাত হোসেন বলেন, “শিশুটি আমার সন্তান নয়, তাই আমি তার দায়িত্ব নিতে পারি না।”

ভুক্তভোগী শিশুর পিতা মামুনুর রশিদ শিশুটিকে তার কাছে ফিরিয়ে দিতে এবং সুস্থ পরিবেশে বড় করার সুযোগ দিতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *