নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার মদন উপজেলা বারবুড়ি গ্রামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে লাহুত মিয়া নামে এক কৃষক খুন হন। ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন পলাতক থাকায় তাদের ঘর-বাড়ি ভাংচুরসহ লুটপাট করে নিয়ে যায় নিহতের পক্ষের লোকজন। ঘটনার পর নিহতের ভাই থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে লুটপাটের ঘটনায় থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, মদন উপজেলার বারবুড়ি গ্রামে মটর বসানো নিয়ে আসামী পক্ষের মানিক মিয়া ও তার লোকজনের সাথে মামলার বাদী আবুল বায়েছ ও তার লোকজনের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল এবং বিভিন্ন সময় তাদের মাঝে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। গত ১১ মে জমিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া বাঁধে। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে লাহুত মিয়া গুরুতর আহত হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ মে মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লাহুত মিয়ার মৃত্যুর খবর শুনে তার স্বজনরা গ্রামের প্রতিপক্ষের প্রায় ৩০টি ঘর-বাড়ি ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে। লুটপাট করে নিয়ে যায় আসবাবপত্র। দলবদ্ধ হয়ে লোকজন আসামীদের ঘরের টিন খুলে নিয়ে যায়। অদ্যাবধি লুটপাট চলছে বলেও জানায় তারা।
গ্রামের ভুক্তভোগী কয়েকজন নারীর সাথে কথা বললে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা জানান, ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত দলবদ্ধ হয়ে লোকজন এসে আমাদের চোখের সামনে সবকিছু নিয়ে যাচ্ছে। আমরা কিছুই বলতে পারছিনা। আমাদের বাড়ীতে কোন পুরুষ লোক নেই। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।
নিহতের ভাই মামলার বাদী আবুল বায়েছ বলেন, গ্রামে মটর বসানো নিয়ে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে আমার ভাইকে বল্লম দিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন খুন করে। আমি এর বিচার চাই। তবে আসামীদের ঘর-বাড়ি ভাংচুরের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমরা তাদের কোন ঘর-বাড়ি ভাংচুর করি নাই। ঘটনার পর তাদের ঘরের আসবাবপত্রসহ সবই নিয়ে তারা পালিয়ে গেছে।
নেত্রকোনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাহেব আলী পাঠান বলেন, এ ঘটনায় থানায় উভয় পক্ষের দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ চলে আসার পর হয়তবা কোন ঘটনা ঘটতে পারে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আসামী গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লুটপাটকারীদের আটকের চেষ্টা চলমান রয়েছে। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।