নেত্রকোনায় ২৮ চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতি, নাগরিক সেবায় ভোগান্তি

অনলাইন ডেস্ক: নেত্রকোনায় অন্তত ২৮টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। অধিকাংশ চেয়ারম্যানই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের অনুপস্থিতির কারণে দাপ্তরিক কার্যক্রম ও নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখা সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনায় মোট ৮৬টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে ২৮ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কর্মস্থলে নেই। সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিতি কেন্দুয়া উপজেলায়। সেখানকার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে আশুজিয়া, দলপা, গড়াডোবা এবং সান্দিকোনাসহ ৯টির চেয়ারম্যান অনুপস্থিত। আটপাড়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নেরও একই অবস্থা। দুর্গাপুরের চণ্ডীগড়, বিরিশিরি, কাকৈরগড়া, দুর্গাপুর সদর ও গাঁকান্দিয়ায় চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির চিত্র স্পষ্ট। খালিয়াজুরির চাকুয়া ও সদর ইউনিয়ন এবং মদনের সদর ও কাইটাইল ইউনিয়নেও চেয়ারম্যানদের পাওয়া যাচ্ছে না।

অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের স্থলে কিছু ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন। তবে কলমাকান্দার পোগলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের অনুপস্থিতির কারণে আর্থিক লেনদেনসহ প্রশাসনিক দায়িত্ব সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির কারণে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, জমি ক্রয়-বিক্রয়, খারিজ, নামজারি, ওয়ারিশান সনদ, অবসর, পেনশন, ভিজিডি ও ভিজিএফ বিতরণসহ নানাবিধ সেবায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটছে। অনেক প্যানেল চেয়ারম্যান দক্ষতার অভাবে এসব সেবা যথাযথভাবে দিতে পারছেন না।

কলমাকান্দার পোগলা ইউনিয়নের এক বাসিন্দা বলেন, ‘চেয়ারম্যান না থাকায় অ্যাসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা সহজে সেবা পাচ্ছি না।’

খালিয়াজুরির চাকুয়া গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, ‘ওয়ারিশান সনদের জন্য দীর্ঘদিন ঘুরছি, কিন্তু কোনো সমাধান পাচ্ছি না। আমার মতো অনেকেই একই সমস্যায় ভুগছেন।’

আটপাড়া উপজেলার এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘সরকারি চাকরির আবেদনের জন্য নাগরিক সনদ প্রয়োজন, কিন্তু চেয়ারম্যানকে না পাওয়ায় তা সংগ্রহ করতে পারছি না। এতে আমার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ছে।’

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মামুন খন্দকার জানান, ‘যেসব পরিষদে চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত, সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবুও যদি সেবায় বিঘ্ন ঘটে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।