নির্যাতনের জবাব হিংসায় নয়, ৩১ দফা বাস্তবায়নে……. তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিনিধি  নীলফামারী : তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে, এখন কাজ করার পালা। দেশকে গড়তে হবে, পুনর্গঠন করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রাখা এখন আমাদের বড় কাজ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে, এখন কাজ করার পালা। দেশকে গড়তে হবে, পুনর্গঠন করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের আস্থা, আশা পূরণ করাই এখন আমাদের বড় কাজ।

নীলফামারী সদর উপজেলার দুবাছুরি দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সোমবার আয়োজিত জনসভায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উদ্যোগে ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি নীলফামারী সদর উপজেলায় র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারকে নতুন বাড়ি হস্তান্তর উপলক্ষে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রতি নির্যাতনের জবাব হিংসায় নয়, ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দিতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রেখে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

গত ১৬ বছরে বিএনপির বহু নেতাকর্মীর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেয়া হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের হাতে নীলফামারীর বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর মতো বহু সহকর্মী খুন হয়েছেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। আমরা এই নির্যাতনের জবাব তাদের মতো করে দেব না। তারা অধম বলে আমরাও অধম হব না। আমরা সব নির্যাতনের জবাব ৩১ দফা সফল করার মাধ্যমে দেব।বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনাদের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। আমরা নিজেদের সংযত রাখব এবং সহকর্মীদের সংযত রাখতে চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার যখন জনগণকে অধিকারবঞ্চিত করে অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল, তখন আমি বলেছিলাম- টেক ব্যাক বাংলাদেশ। এর অর্থ হলো, জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। বাংলাদেশে কী হবে তা বাংলাদেশের মানুষ ঠিক করবে।

টেক ব্যাক বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য অর্জনে দেশের মানুষের সহযোগিতায় দেশের গণতন্ত্রকামী দলগুলো স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। স্বৈরাচারের মাথা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। গত ১৬ বছর তারা নিজেদের আখের গোছাতে ভিনদেশে তাদের প্রভুকে খুশি করতে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের জন্য আমরা দল থেকে কী করব, দলীয়ভাবে কী পদক্ষেপ নিতে পারি- এসব আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে। পরবর্তী নির্বাচনের আগে জনগণকে দেখাতে হবে আপনি কী কী করতে পেরেছেন। সবটা হয়তো আমরা পারব না, তবে যতটুকু করব তা জনগণের কাছে তুলে ধরবো। তখন জনগণ এর বিচার করবে।

তারেক রহমান বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের সব মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ।

ইনশাআল্লাহ, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব যেখানে নিশ্চিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধি ও স্বনির্ভরতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদার রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সামাজিক স্থিতি ও ন্যায়পরায়ণতা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) আসাদুল হাবিব দুলু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ও দলের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ. খ. ম আলমগীর সরকার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম।

আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোখছেদুল মোমিন মিদুল ও সদস্য মোস্তাকিম বিল্লাহ।

সভায় পিতা হত্যার বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন নিহত গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জাহান রিক্তা। তারেক রহমানের পক্ষে ঘরের চাবি নিহত গোলাম রব্বানীর বিধবা স্ত্রীর হাতে তুলে দেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রংপুর বিভাগের ১২ শহীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।