ডেস্ক রিপোর্ট : তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এর মহাব্যবস্থাপক (মেট্রো ঢাকা বিক্রয় ডিভিশন উত্তর) এর বিরুদ্ধে অর্থ-আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোপূর্বে নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে পেট্রোবাংলায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হয়। কিন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থেকে তিনি দাপটের সাথে অপকর্ম করে আসছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জ্বালানি মন্ত্রী নসরুল হামিদ খান এর একান্ত সহচর হিসেবে কাজ করেছে এই রাজিব সাহা। নিয়মিত অফিসে না আসা, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর থেকেও রাতারাতি আওয়ামী রূপ পাল্টিয়ে বিএনপি বনে যাওয়া এই কর্মকর্তার অত্যাচারে জর্জরিত তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সময়ে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন, বাগিয়ে নিয়েছেন পদোন্নতি প্রশিক্ষণ। প্রায় দিনই দুপুরে অফিসে আসলেও তিনি দাপ্তরিক কাজ করতেন না।সোস্যাল মিডিয়ায় ফেক আইডি ব্যাবহার করে কোম্পানীর স্বার্থ বিরোধী কাজ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন চাকরিচ্যুত কর্মচারীকে দিয়ে ফেসবুকে সাবেক একজন এমডিকে নিয়ে টাকার জন্য অভিযান চালায় বলে কুৎসা রটায়। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কমিশনার মোজাম্মেল হক ও পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী কে দিয়ে তিতাসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে চাপ প্রয়োগ করে তদবির করে পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিতাস গ্যাসের মহা ব্যবস্থাপক হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রাজীব কুমার সাহা। সেই সময় তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিতাস গ্যাস কর্মকর্তাদের অ্যাসোসিয়েশনের সাথে আঁতাত করে নেয়। দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক এর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে সৎ, দক্ষ,কর্মঠ ও নিবেদিত প্রাণ তিতাস গ্যাসের অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেন। তিতাসের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনির হোসেন খানের নামে অফিসের আশেপাশে ও পেট্রোবাংলায় পোস্টার সাঁটিয়ে হয়রানি ও মানহানি করার সাথেও ছিল তিনি জড়িত। তিনি মহাব্যবস্থাপক হওয়ার পর রাজধানী সহ তারা আশেপাশে অবৈধ গ্যাসের সংযোগ যেন ব্যাঙের ছাতার মতো ছড়িয়ে গেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তার পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কে রাজীব বাবুর প্ল্যানিং এ হামিদ এগ্রো সাড়ে দশ হাজার ফিট ১৬ ইঞ্চি পাইপ ফেলে তিতাসের সংযোগ দিয়েছে। যেখানে এলাকাবাসীরা ভুক্তভোগি টাকা দিয়েও বৈধ গ্যাস সংযোগ পাচ্ছে না। সেখানে এতবড় কাজ করেছে তার স্বার্থে বিষয়টি খতিয়ে দেখা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন তিতাসের গ্রাহকরা। এলাকাবাসীর দাবি কেন এত টাকা খরচ করে কোন স্বার্থে এই খালি ময়দানে এত বড় গ্যাসের সংযোগ দিয়ে রেখেছে তারা তাদের বোধগম্য নয় ওই এলাকায় নেই কোন ফ্যাক্টরি নেই কোন কলকারখানা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার নিকট কোন গ্রাহক সমস্যা নিয়ে গেলে কারো সাথে তিনি ভাল ব্যবহার করেন না। এসব বিষয় নিয়ে একসময় ঠিকাদার হিসেবে তিতাসে কাজ করা সোহাগ জোয়াদ্দার কথা তুললে এবং তিতাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করলে বিষয়টি জানতে পেরে রাজিব কুমার সাহা ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ জোয়ারদারের ছবি এবং সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লিখে পোস্টার তিতাসের বিভিন্ন অফিসে লাগিয়ে হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছে। এ বিষয়ে নিয়ে সোহাগ জোয়ারদারের সাথে সংবাদের প্রতিধকের কথা বলে তিনি জানান আমি তিতাসের নিয়মিত ঠিকাদারের মত কাজ করতাম আমার মত অনেকেই তিতাসের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করে আমার কর্মজীবনে আমি হাজার হাজার তিতাসের অবৈধ লাইনের সন্ধান দিয়ে তিতাস কর্তৃক লাইন কর্তন করতে সক্ষম হয়েছি সেই সাথে তিতাসের খুঁটিনাটি ঠিকাদারের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। তিতাস থেকে যেহেতু আমাদেরকে বেতন দেওয়া হয় না তাই আমরা ঠিকাদারি কাজকর্ম করে পরিবার চালায় আমার সম্পূর্ণ কর্মজীবনে কোনদিন তিতাস কে কেন্দ্র করে কারো কাছ থেকে দুর্নীতি করে কোন সুবিধা ভোগ করিনি এবং কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। তিতাসের সকলের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক শুধুমাত্র রাজীব সাহার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা করলে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে আমার ছবি দিয়ে তিতাসের বোর্ডে এই বলে লাগিয়েছে যে আমি তিতাসের সাথে দুর্নীতি করি এ বিষয়ে আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করব এবং তার প্রস্তুতি চলছে তার বিরুদ্ধে আর্থিক সংকট দেখিয়ে তিতাসের আঞ্চলিক অফিস প্রধানদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, তার দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে তিতাসে প্রতিবাদ মিছিলের ব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা করছে অনেক ক্ষতিগ্রস্থরা।
তিনি বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অফিসার্স এসোসিয়েশন থেকে সুবিধা নিয়েছেন। তিতাস গ্যাস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন থেকেও অনেক সুবিধা ভোগ করেছেন। আবার রাজনৈতিক পদ পরিবর্তন এর পর সুকৌশলে তিতাসের বিএনপিপন্থী সিবিএর সাথে মিশে জাতীয়তাবাদী ঘরানার কর্মকর্তা বনে গেছেন। তিতাস গ্যাসের বিএনপি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত একজন প্রকৌশলীর সাথে একত্রিত হয়ে প্রায় ১০০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর বদলি বাণিজ্য সহ ১০/১৫ বছর আগে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি তিতাসে ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি করে চলেছেন। রাজীব কুমার সাহার ব্যক্তি জীবন নানা কলঙ্কে ভরপুর। তিনি একজন পরকীয়া আসক্ত পুরুষ বলেও জানান তিতাস গ্যাসের চাকরিচ্যুত কর্মচারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিবিএ নেতা। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজের আওয়ামী চরিত্র বদল করে রাতারাতি বিএনপি বনে যাওয়া রাজীব কুমার সাহার দাপটে তটস্থ সকলেই। সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা রাজিব বাবু আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে দিন পার করছেন। তারা এই ধরনের অরাজক পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
কে এই রাজিব কুমার সাহা? তার খুটির জোড় কোথায়? তার সম্পদের সমস্ত হিসাব নিয়ে আগামী পর্বে থাকবে চাঞ্চল্যকর সকল তথ্য।