ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন একই এলাকার মৃত লাচু মিয়ার ছেলে লাল মিয়া ও চাঁনমিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা তালজাঙ্গা ইউনিয়নের কার্তিকখিলা গ্রামে।
জানা যায়, উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের কার্তিকখিলা মৌজায় কতক ভূমির আর এস রেকর্ড মৃত আপ্তর হোসেনের নামে লিপিবদ্ধ হয়। ওই ভূমি মৃত লাচু মিয়ার ছেলে লাল মিয়া ও চাঁন মিয়া নিজেদের পৈতৃক ভূমি হিসেবে দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। মৃত আপ্তর হোসেনের এক ছেলে ইদু পৈত্রিক সত্ত্বে প্রাপ্ত হইয়া দখলকার থাকিয়া এক মেয়ে দীপ্তি’কে ওয়ারিশান বিদ্যমান মৃত্যুবরণ করেন। দীপ্তির মা-বাবা’র মৃত্যুর পর এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এই সুযোগে মৃত আপ্তর হোসেনের জমি একই এলাকার দুই ভাই মৃত লাচু মিয়ার ছেলে লাল মিয়া ও চাঁন মিয়া দখল করে নিজ নিজ ঘর বাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করেন।
ইদানিং ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর লাল মিয়া ও চাঁন মিয়া তাদের নিজ নিজ এনআইডি কার্ডে পিতার নাম লাচু মিয়া থাকলেও বিগত ১৩ /০৪/২০২৫ সন তারিখে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের যোগসাজেশে পিতার নাম সংশোধন করে মৃত আপ্তর হোসেন লাচু নাম দিয়ে নতুন এন আইডি কার্ড সংশোধন করেন।
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আপ্তর হোসেনের ভূমি আত্মসাৎ করার জন্য লাল মিয়া এবং চাঁন মিয়া মোটা টাকার বিনিময়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় লাচু মিয়ার পরিবর্তে আপ্তর হোসেন এর নাম সংযোজন করে এনআইডি কার্ড সংশোধন করেছেন। অথচ লাল মিয়া বিবাহ নিকাহ রেজিস্টার থেকে প্রাপ্য তথ্য অনুযায়ী তাদের পিতার নাম মোঃ লাচু এবং তাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় সেখানেও পিতার নাম মোঃ লাচু লেখা আছে।
এ ব্যাপারে একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু জাহেদ ভূঁইয়া বিগত ০৭-০৩-২০২৫ সন তারিখে একটি প্রত্যয়ন পত্র দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন মৃত আপ্তর হোসেন এবং লাচু দুই ব্যক্তি। একই ব্যক্তি নন। তাছাড়া বিগত ০৪/০৮/২০০৯ সন তারিখে তাড়াইল সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ১৫৯০ নম্বর দলিলে ১৫ শতাংশ জমি হস্তান্তর করেন। ওই দলিলে লাল মিয়া এবং চাঁন মিয়ার পিতার নাম মো: লাচু লিখা আছে।
একই ব্যক্তির দুটি এন আইডি কার্ড কি করে হলো এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কমিশনার সৈয়দা আশুরা আক্তার খাতুনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাল মিয়া,চাঁন মিয়া তাদের পিতার নাম ভুলবশত মো: লাচু হয়েছে।তাই পিতার নাম আপ্তর হোসেন দিয়ে নতুন এন আইডি কার্ড নিয়েছেন। কোন কাগজের বলে পিতার নাম সংশোধন করেছেন দেখতে চাইলে তিনি কোন কাগজ দেখাতে রাজি হয়নি এবং কোন সহযোগিতা করেনি।
এলাকাবাসী জানান মৃত আপ্তর হোসেনের ভূমি লাল মিয়া এবং চাঁন মিয়া নিজেদের দাবি করে বিগত ২০১৭ সালে কিশোরগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নম্বর ২০১৭/১৬৪।বিজ্ঞ আদালত সবকিছু পর্যালোচনা করে লাল মিয়া এবং চাঁনমিয়া দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় আইন শৃঙ্খলার অবনতি দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বিরাজ করছে।