রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী মহানগরের কাজলা অক্ট্রয় মোড়ে (মতিহার থানা এলাকায়) মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় দুই যুবতী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মোঃ পাপ্পু হোসেন নামে এক যুবককে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীরা ওই যুবকের প্যান্টের চেইন সামান্য খোলা ছিল বলে দাবি করেন, যা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ছবি দেখে রূপ পায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ায়।
আনুষ্ঠানিক বর্ণনায় জানা যায়, পাপ্পু দাবি করেন, তিনি সকালের কাজ শেষে একটি অটোতে উঠে বাড়ির পথে ছিলেন। অটো কাজলা মোড়ে পৌঁছালে দুই শিক্ষার্থী তাঁকে উত্তেজিতভাবে প্রশ্ন করেন কেন তাঁর চেইন খোলা ছিল। পাপ্পু বলেন, তিনি তা টের না পেয়ে দ্রুত চেইন লাগিয়ে নিয়েছিলেন এবং বলেন, “অনেক সময়ই এমন ঘটে যায়।” দাবি করেন, এমনকি তাঁর গায়েই শর্ট প্যান্ট (জাংগিয়া) ছিল, তাই দৃশ্যত চেইন খোলা দেখা গেলেও উদ্দেশ্যমূলক কিছু ছিল না।
তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পাপ্পু অটো থেকে নামতে বাধ্য করেন এবং ধাক্কাধাক্কি ও শারীরিক হেনস্থা শুরু করেন। পাপ্পু সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তিনি নারীর হাতে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত ছিলেন, স্টানডিং অবস্থায় পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছিলেন এবং পরে লজ্জাজনক অবস্থা এড়াতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছবিটি ভাইরাল হয়। পাপ্পু জানান, এটি তাঁর সম্মানে আঘাত করেছে, মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তিনি অনুরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা ছবিটি মুছে ফেলুক, নতুবা তিনি আইনগত পদক্ষেপ নেবেন।
মেয়েদের পরিচয় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে—তারা নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (রাজশাহী) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বলে দাবি করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণের মনোযোগ দুই দিকেই ঘোরে—এক দিকে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের বিবেচনা, অন্য দিকে সামাজিক বিচার, প্রমাণ ও ন্যায্যতা। আইনজীবীরা বলছেন, শ্লীলতা-অভিযোগ ও মানহানির মতো বিষয়গুলিতে আগেই প্রমাণ ও স্বাক্ষ্য সংগ্রহ জরুরি। অভিজ্ঞ আইন বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, “কোনো ঘটনা ঘটে গেলে অতিরিক্ত উত্তেজনায় এগিয়ে গিয়ে বিচারপ্রক্রিয়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে; তাই নিরপেক্ষ তদন্ত অপরিহার্য।”
মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক জানায়, এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সংশ্লিষ্টরা সবাই একটাই দাবি—প্রমাণভিত্তিক নিরপেক্ষ বিচার, যাতে অভিযোগ ও প্রতিকার—উভয় পক্ষই সাম্যপূর্ণ হয়।