চারুকলায় ফের হচ্ছে ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি, নববর্ষে থাকছে ‘সারপ্রাইজ’

ইউএনবি নিউজ: বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের আদেশে নতুন করে সেই প্রতিকৃতি তৈরি করছেন শিল্পীরা।

সরেজমিনে ঢাবির চারুকলা অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে প্রতিকৃতিটি তৈরির কাজ চলছে। রাতারাতি কাজ শেষ করতে আপাতত কর্কশিট দিয়েই কাজ চালাচ্ছেন শিল্পীরা।

এর আগের মোটিফটি তৈরি করতে প্রায় ১ মাস সময় লেগেছিল, সেখানে এক রাতের মধ্যে একই ধরনের আরেকটি মোটিফ তৈরি দুঃসাধ্য হলেও সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তারা।

কর্মরত শিল্পীরা বলেন, আগের মোটিফটি তৈরিতে প্রচুর শ্রম ব্যয় হয়েছে। যারা মোটিফটিতে আগুন দিয়েছেন, তারা এর শিল্পী এবং শিল্প—উভয়কেই অপমান করেছেন। দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।

ঢাবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল থেকে শিল্পীরা কাজ করছেন। পুরো ব্যাপারটি তাদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাবির চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক এ এ এম কাউসার হাসান বলেন, ‘২৪-এর অভ্যুত্থানকে উপলক্ষ করে আমরা একটি মোটিফ বানিয়েছিলাম। সেটি ছিল ফ্যাসিস্টের একটি মোটিফ। পরবর্তীতে বাংলাদেশে যেন আর কোনো ফ্যাসিস্ট তৈরি না হয়, এই প্রতিপাদ্য ধারণ করেই সেটি আমরা বানিয়েছিলাম। কিন্তু মোটফটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তবে শিল্পীরা তো দমার পাত্র নন। ২৪-এ যারা আত্মাহুতি দিয়েছে, যারা আহত হয়েছে, তাদের কথা স্মরণ করে আমরা আরেকটি ফ্যাসিস্টের মোটিফ তৈরি করছি। কালকে (নববর্ষে) সবাই সারপ্রাইজ হিসেবে সেটি দেখতে পাবেন।’

এ সময় আক্ষেপ করে এই শিক্ষক বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতির পাশাপাশি তার পাশে থাকা শান্তির পায়রার মোটিফটিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পাশেই স্থপতি মাজহারুল ইসলামের ভবন রয়েছে। সেটিও পুড়ে যেতে পারত। এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। অথচ আগুন দেওয়ার সময় এই বিষয়গুলোকে এমন ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছিল।’

এবারের শোভাযাত্রায় স্বৈরাচারী শাসকের প্রতিবাদে অশুভর প্রতীক দানবীয় ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ছাড়াও ইলিশ মাছ, বাঘ, পালকি, পাখি, ‘মুগ্ধ’ পানির বোতলের মতো মোটিফ রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *