গুলশানে স্পা সেন্টার নিয়ে নতুন বিতর্ক — অভিযানে ওসি, ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন হিরা!

রাহিমা আক্তার মুক্তা : রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-২, রোড-২৪, বাড়ি-৯১/বি–এই ঠিকানায় ‘Give Love Spa’ নামক একটি স্পা সেন্টার নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা। এই প্রতিষ্ঠানের মূল পরিচালক মেজবাহাউদ্দিন হিরা ও তার সহযোগী হুমায়ূন।

অনুসন্ধান ও মোবাইল ফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কাস্টমার সেজে যোগাযোগ করা হলে হিরার একজন স্টাফ সরাসরি জানায়—“প্রতিমাসে থানার ওসি সাহেবকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাই এখানে কাস্টমারদের কোনো সমস্যা হবে না।”

এই কথাতেই স্পষ্ট হয়ে যায় প্রশাসনের কিছু সদস্যের ছত্রছায়ায় কীভাবে অবাধে চলছে অনৈতিক কর্মকাণ্ড।

বিশ্বস্ত সূত্র ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্পা সেন্টারটিতে নিয়মিত অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছিল। এ নিয়ে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় যোগাযোগ করলে ওসি হাফিজ জানান, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়—কারণ, এর আগেও এমন অভিযোগ উঠলে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমি ও আমার থানার কেউ এসব অপকর্মের সাথে জড়িত নই।”

তবে মজার বিষয় হলো, তিনি নিজেই দাবি করেছেন, গুলশান থানায় যোগদানের পরপরই তিনি ৯১/বি বিল্ডিংয়ে একবার অভিযান পরিচালনা করেন। তাহলে স্বাভাবিক প্রশ্ন উঠছে—অভিযান পরিচালনার পরও কীভাবে একই ঠিকানায়, একই ব্যক্তি আবার চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা?

অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যকে নিয়মিত সুবিধা দিয়েই এই অনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন হিরা ও হুমায়ূন।

এখন দেখার পালা, গুলশান থানার ওসি হাফিজ ভবিষ্যতে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেন। নাকি সবই শুধু লোক দেখানো অভিযান?

বিশ্বাসযোগ্য সূত্র জানায়, হিরা নিজে একজন চিহ্নিত স্পা ব্যবসায়ী, যার বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। সে গ্রামের সহজ-সরল মেয়েদেরকে চাকরির আশ্বাস দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসে, পরে তাদের নামিয়ে দেয় অনৈতিক ব্যবসার অন্ধকার রাস্তায়।

জানা গেছে, অনেক তরুণী পরিবার-পরিজনের অজান্তেই এমন একটি চক্রের শিকার হচ্ছেন, যেখান থেকে ফেরার পথ প্রায় নেই।

সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, এই স্পষ্ট অভিযোগের পরও প্রশাসন এখনো নীরব কেন? থানার ওসির প্রতি যে “সম্মাননা” দেওয়া হয়, সেটাই কি বাধা হয়ে দাঁড়ায় আইনি পদক্ষেপে?

সাংবাদিক মহল থেকে জোর দাবি উঠেছে—হিরার স্পা সেন্টারটি দ্রুত তদন্ত করে বন্ধ করা হোক এবং যারা এই চক্রে মদদ দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হোক দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা। তাছাড়া ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com