চ্যানেল7বিডি ডেক্স: ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে মঙ্গলবার কাতারের দোহায় আলোচনায় বসবেন মধ্যস্থতাকারীরা। সোমবার মধ্যরাতে আলোচনায় অগ্রগতির পর ইসরায়েল ও হামাসের কাছে চুক্তির খসড়া উপস্থাপন করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তার সমর্থিত এই যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি এখন কার্যকর হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকবে।
সোমবার এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, “এই চুক্তি জিম্মিদের মুক্তি দেবে, যুদ্ধ থামাবে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে।” তিনি আরও বলেন, যদি এই চুক্তি সফল হয়, তবে এটি দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আলোচনার সফল সমাপ্তি হবে।
এর আগে, হামাস ২৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে প্রায় অর্ধেক ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল।
চুক্তির মূল বিষয়গুলো
১. প্রথম ধাপে শিশু, নারী, বয়স্ক এবং আহত ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
২. ১৬ দিন পর দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় বাকি জীবিত জিম্মি এবং মৃতদেহ ফেরত নিয়ে আলোচনা হবে।
৩. ইসরায়েলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজা থেকে সরে দাঁড়াবে।
৪. নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উত্তর গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
চুক্তি চূড়ান্তের অগ্রগতি
রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কাতারের মধ্যস্থতায় দোহায় চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করা হয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানিয়েছেন, “আমরা চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার খুব কাছাকাছি আছি।”
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, “এখন সবকিছু নির্ভর করছে হামাসের ওপর। তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।“
ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চুক্তির আওতায় ৩৩ জন জিম্মি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সাআর বলেন, “পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক উন্নত। আমাদের মার্কিন বন্ধুদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।“
পূর্বপ্রেক্ষাপট
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়, যাতে ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক আক্রমণ চালায়, যা প্রায় ৪৬,০০০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটায় এবং অধিকাংশ এলাকা ধ্বংস করে।
চুক্তির সময়সীমা
রয়টার্স জানিয়েছে, চুক্তিটি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক একটি সময়সীমা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।