আনোয়ার হোসেন রানা,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় হামলাকারী সিজু মিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকান্ড দাবি করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে শনিবার (২৬ জুলাই) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে পুলিশ সুপারের সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসে এ কর্মসূচি তুলে নেওয়া হয়। মানববন্ধন ও বিক্ষোভে সিজুর সজন, এলাকাবাসী ও জুলাই যোদ্ধারা অংশ নেন।
সিজুকে পিটিয়ে হত্যা করে পুলিশ নাটক সাজিয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বলেন,“সিজু অপরাধ করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে,পারতো আইন অনুযায়ী শাস্তি হতো। কিন্তু তা না করে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি; পানিতে ডুবে মৃত্যুর নাটক সাজানো হয়েছে। অথচ সিজু সাঁতার জানতো। সে নদী পাড়ের বাসিন্দা। আর সাঁতার না জানলে সে কেনই বা পুকুরে ঝাঁপ দেবে?”
এ সময় সিজুর স্বজনেরা জানায়,“একটি মোবাইল-ফোনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত। একটি দোকান থেকে সে একটি মোবাইল-ফোন কিনেছিল। সম্প্রতি সেটি চোরাই জানিয়ে সাঘাটা থানার দুইজন পুলিশ সদস্য বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। তারপর পুলিশের পক্ষ থেকে সাঘাটা থানায় যোগাযোগ করার কথা বলা হয়।”
বিক্ষোভকারীরা এ ঘটনায় নিরপেক্ষ দাবি জানিয়ে বলেন,“এ ঘটনা সুষ্ঠ তদন্ত করতে হবে। অবিলম্বে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।” অন্যথায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ার দেন বক্তারা।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, সিজু মিয়ার মা রিক্তা বেগম, ইউপি সদস্য রমজান আলী, হাসু আল-আমিন হিরু, জুলাই যোদ্ধা মেহেদী হাসান, জাহিদ হাসান জীবন,অতনু সাহা, জেলা শিবিরের সভাপতি ফেরদাউস সরকার রুম্মান প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সাঘাটা থানায় অভিযোগ করতে এসে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশের এক কনস্টেবলের বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন সিজু মিয়া। পুলিশের অন্য সদস্যরা বাধা দিলে এক এএসআইকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে পাশের সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরে ঝাঁপ দেন তিনি। পরদিন শুক্রবার সকালে ওই পুকুর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। সন্ধ্যায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষের রাত একটার দিকে সিজুর লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। পরদিন শনিবার তাকে দাফন করা হয়।
সিজু মিয়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাগুরিয়া গ্রামের দিনমজুর দুলাল মিয়ার ছেলে।