গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, অগ্নিসংযোগ লুটপাটের প্রতিবাদ ও তিন সাঁওতাল হত্যার ন্যায় বিচারসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১টার দিকে নিহতদের স্মরণে সাহেবগঞ্জ এলাকায় অস্থায়ী দাবিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্বালন ও ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। পরে একটি শোক মিছিল নিয়ে সাঁওতালপল্লী-অধ্যুষিত বাগদা ফার্ম থেকে বের হয়ে কাঁটামোড় হয়ে সাহেবগঞ্জ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সাহেবগঞ্জ এলাকায় সাঁওতালরা সমাবেশ করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি গণেশ মুর্মু, বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন, আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের এডভোকেট প্রভাত টুডু, ভূমিহীন আন্দোলনের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, আদিবাসী বাঙ্গালী সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহ্বায়ক গোলাম রাব্বী মুসা, সাঁওতাল নেতাবৃন্দ বিমল বেসরা, জামিন হেমব্রন, ময়রা হেমব্রন, রুমিলা কিসকু, ইলিকা টুডু প্রমুখ।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ঘটনার নয় বছর পার হলেও মামলার উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। পিবিআই তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই ৯০ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। কিন্তু মূল আসামিসহ ১১ জনকে আসামির শ্রেণিভুক্ত না করায় ভিকটিম (বাদীপক্ষ) নারাজি দিলে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্তভার পুনরায় সিআইডিকে দেওয়া হয়। সিআইডির ঢিলেঢালা তদন্ত কার্যক্রম ও কার্যকর তদন্ত না করায় ভিকটিম আদিবাসী সাঁওতালরা চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
নিহত ও ভুক্তভোগীর স্বজনদের আশা, সিআইডি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত আসামিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বিনা নোটিসে পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা উপজেলার জয়পুর ও মাদারপুর গ্রামে সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠীদের বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে রংপুর সুগার মিলস কর্তৃপক্ষ। অভিযানে হামলা, বসতবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই সময় গুলি ও নির্যাতনে শ্যামল হেমরম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডু নামে তিন সাঁওতাল নৃ-গোষ্ঠী নিহত ও অনেকেই গুরুতর আহত হন।