আনোয়ার হোসেন রানা,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধায় সাকোঁয়া ব্রিজ এলাকায় ইপিজেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার “সাকোঁয়া ব্রিজ ইপিজেড বাস্তবায়ন মঞ্চ,গাইবান্ধা”—এর উদ্যোগে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের সাঁকোয়া ব্রিজ এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের দাবিতে গানাসাস মার্কেটের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সাকোঁয়া ব্রিজ ইপিজেড বাস্তবায়ন মঞ্চ,গাইবান্ধা’র সভাপতি এ্যাড.কুশলাশীষ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.ফারুক কবীরের আহ্বানে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন,জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু,সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু,গাইবান্ধা জেলা বারের সদস্য এ্যাড. মোহাম্মদ আলী প্রামানিক,রবিদাশ ফোরামের সভাপতি সুনীল রবিদাস,রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস,আইনজীবী সহকারী আব্দুল হাই,সমাজকর্মী মনির হোসেন সুইট,সাদেকুল ইসলাম,জিহাদ প্রধান,মানবাধিকার কর্মী কাজি আব্দুল খালেক,সোমা ইসলাম,কাজি আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,“গাইবান্ধা আজ উন্নয়ন থেকে ছিটকে পড়া এক ‘পকেট শহর’, যেখানে নেই শিল্প,নেই কর্মসংস্থান,নেই সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার।অথচ এই জনপদের পাশে,সাঁকোয়া ব্রিজ এলাকায় যদি ইপিজেড গড়ে ওঠে,তাহলে গোটা জেলার চিত্রই বদলে যাবে। গাইবান্ধার সাবেক জেলা প্রশাসক ড. কাজী আনোয়ারুল হক এই এলাকাকে কেন্দ্র করে ইপিজেড গঠনের সুপারিশ পাঠিয়েছিলেন,যেটি গাইবান্ধাবাসী আন্তরিকভাবে সমর্থন করেছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করে এই প্রস্তাব বাতিল করে আদিবাসী সাঁওতাল পল্লীর মতো একটি বিরোধপূর্ণ এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের চেষ্টা করছে, যা মানবিক ও সুশিল মানুষের আপত্তির মুখে ইতিমধ্যেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।”
বক্তারা বলেন, “সাঁকোয়া এলাকায় ইপিজেড হলে রয়েছে সহজ যোগাযোগ—রেলপথ, রাজপথ, নৌপথ, এমনকি হেলিপ্যাডও নিকটেই। এতে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বাড়বে,কর্মসংস্থান হবে হাজারো মানুষের।সুন্দরগঞ্জ,সাঘাটা,ফুলছড়ি,পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলার মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারবে।”
তারা আক্ষেপ করে বলেন,“গাইবান্ধার উন্নয়নকে উপেক্ষা ও পরিবেশগত (EIA) বা সামাজিক প্রভাব (SIA) মূল্যায়ন ছাড়াই বর্তমান জেলা প্রশাসকের একতরফা সিদ্ধান্তে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের দাবীকৃত বিতর্কিত উর্বরা ফসলী জমিতে ইপিজেড করার ঘোষণা শুধু অনৈতিকই নয়,গাইবান্ধাবাসীর সঙ্গে চরম অবিচার।”
একটি নবীন রাজনৈতিক দলের প্রভাবিত সিদ্ধান্তে জেলার ৯০ শতাংশ মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া হয়েছে।গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্সও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এই প্রস্তাবনায় সহযোগিতা করে।”
তারা আরও বলেন,“এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়—এটা গাইবান্ধার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম।এই জনপদের মানুষ উন্নয়নের আলো দেখতে চায়, কাজের সুযোগ চায়, স্বপ্নপূরণের পথ খোঁজে।সেই পথ শুরু হোক সাঁকোয়া ব্রিজ এলাকায় ইপিজেড বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে।”
সমাবেশ থেকে বক্তারা আরও দাবি জানান—গাইবান্ধা সাঁকোয়া ব্রিজ এলাকায় অবিলম্বে ইপিজেড বাস্তবায়ন,বালাসীঘাট থেকে বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত টানেল/সেতু নির্মাণ,গাইবান্ধায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা,গ্যাস সংযোগ ও আধুনিক রেল যোগাযোগ,সদর হাসপাতালের দ্রুত আধুনিকীকরণ।
সমাবেশের শেষে বক্তারা আহ্বান জানান, “এসো, দলমত নির্বিশেষে গাইবান্ধা উন্নয়নের লক্ষ্যে এক হই—ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক বাস্তব স্বপ্ন গড়ে তুলি।”