নিউজ ডেক্স: গরু কিংবা খাসির মাংস যেখানে উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষের হাতের বাইরে, সেখানে একসময়ের সস্তা ব্রয়লার মুরগিও এখন দামের কারণে অনেকের নাগালের বাইরে চলে গেছে। শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারে মুরগি কিনতে গিয়ে হতাশ হয়েছেন ক্রেতারা। ব্রয়লারের কেজি এখন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগেও ছিল ১৭০ টাকা।
কদমতলীর বাসিন্দা নাসিমা আক্তার বলেন, “বাড়িতে বৃদ্ধ স্বামী কর্মহীন। আমার আয় দিয়ে এত দামি মুরগি কেনা খুব কঠিন।” তিনি আরও ছোট মুরগি খুঁজতে অন্য দোকানে যান। একই অবস্থা মো. আনিস রহমানের। তিনি ব্রয়লার, সোনালি, কক, এমনকি লেয়ারের দাম জেনে হতাশ হয়ে কিছুই না কিনে ফিরে যান।
দাম বাড়ার কারণ
পাইকারি বিক্রেতারা জানান, শীতকালে বিয়ে-সাদি, বারবিকিউসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। একই সঙ্গে খামার থেকে সরবরাহও কম, যার ফলে দামে প্রভাব পড়েছে। কাপ্তানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী খলিল মিয়া বলেন, “পাইকারিতে ব্রয়লারের দাম এখন ১৮০ টাকার আশপাশে। পরিবহন ও অন্যান্য খরচ যোগ হলে খুচরায় ২০০ টাকার নিচে বিক্রি সম্ভব নয়।“
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, এক মাসে ব্রয়লারের দাম ১১% বেড়েছে।
বাজারের কারসাজি ও খামারিদের দুর্দশা
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, “বাচ্চা ও ফিডের বাজার করপোরেট কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এক দিনের বাচ্চার দাম নির্ধারিত ৪৯ টাকার বদলে ৬০-৭০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এভাবে খামারিদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।“
খামারিদের দাবি, বাজারে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না হলে ছোট খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, “মুরগি ও ডিমের বাজারে কারসাজি বন্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আইনের প্রয়োগ না থাকায় অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে।”
উপসংহার
ব্রয়লারের বাজারে দফায় দফায় দাম বাড়ার ফলে এটি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। খামারি ও ভোক্তাদের দাবি, উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার কারসাজি বন্ধ না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।