খুলনা বিএনপি নেতা নিজ ভাবীকে ধর্ষণ চেষ্টায় আদালতে মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি : খুলনা সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মনির বিরুদ্ধে তার সৎ ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, তার সৎ ভাইয়ের স্ত্রী গত ১৯ ফেব্রুয়ারি খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ অভিযোগ দায়ের করেন। মিস পিটিশন নং-২৫/২৫। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তী তদন্ত শেষে আগামী ২০ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার দিকে খুলনার হাজী ইসমাইল লিংক রোড এলাকায় বাদীর স্বামীর বাসার শয়নকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। বাদী গোসলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সে সময় অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মনির আগে থেকেই দরজার আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন। তিনি হঠাৎ করে বাদীকে জাপটে ধরে খাটের ওপর ফেলে দেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বিএনপি নেতা মনির বাদীকে বিবস্ত্র করে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বাদী তাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে ফেলে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বাদীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে মারধর করেন। এতে বাদীর শরীরে থেঁতলে যাওয়া দাগ ও গুরুতর আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।

পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এলে অভিযুক্ত মনি বাদীর স্বামী ও দুই সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। এরপর বাদীকে গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়

বৃহস্পতিবার ওই ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাফিজুর রহমান মনির সম্পর্কে আমার ভাসুর হন। ওই দিন ঘটনার পর আমি সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি মামলা না নিয়ে উল্টো আসামি মনিকে ফোন দিয়ে বলে, আপনারা ঝামেলা মিটিয়ে ফেলেন। বিষয়টি আমি সেনাবাহিনী ক্যাম্পেও অবহিত করি। প্রতিকার না পেয়ে আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা করি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে হাফিজুর রহমান মনি যোগাযোগ করলে মনির বলেন, বাদী আমার সৎ ভাইয়ের স্ত্রী। আমার ভাই ঢাকায় চাকরি করে। ওর স্ত্রী এখানে থাকে, আমাদের একই বাউন্ডারির মধ্যে বসবাস করি,
ও অশালীন পোশাক পড়ে রাস্তায় চলাফেরা করে। পরিবারের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার্থে তাকে অনেকবার শালীনভাবে চলার পরামর্শ দেই। কিন্ত সে কথা না শুনে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করে। এমনই এক পরিস্থিতিতে পরিবারের অভিভাবক হিসেবে আমি তাকে দুটো চড় মেরেছি। এছাড়া আর কিছু সেখানে ঘটেনি।

উক্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন ভদ্রমহিলা থানায় এসেছিলেন। জানতে পেরে আত্মীয় স্বজনরা এসে তাকে থানা থেকে নিয়ে যান। অভিযোগটি তদন্ত করছেন পিবিআই খুলনার পুলিশ পরিদর্শক মো. ইকরাম হোসেন। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাদীর অভিযোগটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *