মিরপুর প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান’র ছেলে আরিফ আহমেদ অভির উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আনুমানিক ৭টার দিকে কুর্শা ইউনিয়নের মাজিহাট স্কুল মাঠে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুত্বর আহত অভি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় অভিসহ তার দুই বন্ধু মাজিহাট স্কুল মাঠে বসে ছিলেন। সেসময় জাসদ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান ওমর আলীর নেতৃত্বে ২০/২৫ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অভির উপর অতর্কিত হামলা চালায়। অভিকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে জখম করে চলে যায় হামলাকারীরা। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে হামলার পরে অপপ্রচারেও লিপ্ত হন হামলাকারীরা। তারা প্রচার করেন-“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করায় তাকে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী।” এছাড়াও তারা হামলা করে চলে যাওয়ার সময় আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী রকি জানান, রাত আনুমানিক ৭টার সময় আমি ও অভিসহ ৩জন মাজিহাট স্কুল মাঠে গিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি চিল্লাচিল্লি করতে করতে ২০/২৫ জন আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা অভিকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। হামলায় নেতৃত্বে ছিলেন জাসদ নেতা ওমর আলীর ভাতিজা জামাল, তার আত্মীয় হৃদয়, ইকতার মেম্বারের ছেলে রনি, মনি, কুন্ঠিয়ারচর গ্রামের বিপুল অন্যতম। তবে অন্ধকার থাকায় অনান্যদের চিনতে পারা যায়নি। হামলাকারীরা সবাই জাসদ নেতা ওমর আলীর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য। এছাড়াও ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা পতনের পর এইসব জাসদ নেতারাই কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান’র বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। তবে বিএনপি’র কেউ এই হামলার সাথে জড়িত নয় বলেও জানান ভুক্তভোগী হান্নান চেয়ারম্যান।
এবিষয়ে কুর্শা ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, বিএনপির কেউ এই হামলার সাথে জড়িত নয়। যারা এই হামলার সাথে জড়িত তাদের ইতিপূর্বে বিএনপির কোন প্রোগ্রামে দেখিনি। এঁরা ৫ আগষ্টের পর নব্য বিএনপি।
কুর্শা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে আমার জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে। এঁরা সবাই নব্য বিএনপি।
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, নির্বাচনে মশাল প্রতীক নিয়ে জাসদপ্রার্থী ওমর আলীর সাথে আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। এর জের ধরেই তার সাথে আমার বিরোধ চলে আসছিল। ইতিপূর্বে আমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুর চালায় এই জাসদ সমর্থিত ওমর আলীর লোকজন। গতকালকেও তার লোকজনই আমার ছেলের উপর হামলা চালিয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করায় আপনার ছেলের উপর হামলা চালানো হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে সুবিধা নেওয়ার জন্যই এই কুৎসা রটানো হচ্ছে। বিএনপি’র কেউ আমার বাড়িতে হামলার চালায়নি। এমনকি আমার ছেলের উপর হামলার সাথে বিএনপির কেউ জড়িতও না।
এদিকে সরাসরি বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত ওমর আলীর বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সেসময় তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িত না। ইতিপূর্বেও আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি হামলার সময় বাজারে বাজার করছিলাম।
প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ হোসেন ইমাম’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভির গায়ে বেশকিছু ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।