স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা এয়ারপোর্ট বিমানবন্দর থানা সালাউদ্দিন পিয়ারী দাপটীয় সন্তান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন। অভিযোগ উঠেছে মামলার আসামি হয়েও ধরা ছোয়ার বাইরে ইয়াসিন। মামলার ২২ নম্বর আসামি দীর্ঘদিন জেলে এখনো জামিন মিলেনি। অথচ একই মামলার আসামি ইয়াসিন ৫ নম্বর আসামি তবুও ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন এমন কথা সবার মুখে এয়ারপোর্ট এলাকায়।
দলের নেতা কর্মীদের প্রশ্ন ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুল হক নাঈমের বিশ্বস্ত হাতিয়ার ছিলেন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরাফাত রহমান ( ইয়াসিন) সকল ব্যবসায়ী ইয়াসিন ও তার বাবা সালাউদ্দিন পেয়ারি অধীনে। তথ্যসূত্রে জানা যায়। এয়ারপোর্ট বিমানবন্দর মক্কা হোটেল,আরাফাত রহমান ইয়াসিন আবাসিক হোটেল। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ম-শৃঙ্খলা না মেনে ব্যবসা করছেন দীর্ঘদিন যাবত।কাউকে পাত্তা দেয়নি কারণ কাউন্সিলর নাঈমের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন তিনি।
এখন জানা যায় সালাউদ্দিন পিয়ারী নিজেকে বিএনপির বিশাল মাপের নেতা বলে দাবী করেন। বাঞ্ছারামপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ডিআইজি খালেক নাম ব্যবহার করেন তিনি।এমনই অজস্র নেতার সাথে রয়েছেন তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক এমনটাই দাবি করেন সালাউদ্দিন পিয়ারী।মামলার আসামি ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিনের বিষয় জানতে ওসি বিমানবন্দর থানা জানান বিষয়টা আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নিব। সরোজমিনে দেখা যায়। ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাঈম, এডভোকেট সাহারা খাতুন ও তৎকালীন বিতর্কিত বিমানবন্দর থানার ওসি ফরমানের সাথে রয়েছে তার সুসম্পর্ক। সেই সম্পর্ক কে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন দখল দায়িত্ব। এমনই অভিযোগ উঠেছে বাপ ছেলের বিরুদ্ধে। কি অভিনয় লজ্জাবতী গাছের মতো সরকার পতনের পর খোলস পাল্টিয়ে এখন বিএনপি পরিচয় দিচ্ছেন ওরা। আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সর্বস্তরে নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্ক দেখে সাধারণ মানুষ হতবাগ। যে দল আসুক না কেন সবই তাদের এমন দৃশ্যমান বাস্তব চিত্র অহর অহর মিলছে চোখে।
অথচ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আওয়ামী লীগের সাথে কোন নেতাকর্মীর ছবি আছে তাকে দলে রাখা যাবে না।পোস্টে রাখা যাবে না। তারেক রহমানের কথা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি অমান্য করে সালাউদ্দিন পিয়ারির সাথে গড়ে তুলেছেন কিছু নেতা কর্মী বন্ধুত্ব। এয়ারপোর্টে এক সময় কাউন্সিলর নাঈমের চাপে কোণঠাসা বিএনপির তৃণমূলের ত্যাগীরা ছিলো কারো অজানা নয়। শুধু কষ্ট করতে হয়নি সালাউদ্দিন পেয়ারি ও তার অঙ্গ সংগঠন এবং ছাত্রলীগ ছেলে এয়াসিন কে। দাপটের সাথে রাজত্ব করেছেন বাপ ছেলে। তখন করুন দৃশ্য দেখার কেউ ছিলনা। বুক ভরা ব্যথা নিয়ে দিন কাটিয়ে ওঠা ত্যাগী আর যোগ্যরা থাকেন আতঙ্কে।
এখন চিত্র পাল্টে গেছে এমনটা জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কয়েকজন বিএনপির নেতা।হাইব্রিডদের’ চাপে কোণঠাসা বিএনপির তৃণমূলের ত্যাগীরা,বদলে যাচ্ছে বিএনপির মাঠের চিত্র। আর্বিভাব ঘটছে হাইব্রিডদের। আন্দোলনের মাঠে ছিলেন না, মামলা-হামলা কিংবা নির্যাতনের মুখেও ছিলেন না, ঘরছাড়াও হতে হয়নি। বিগত দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন, তাল মিলিয়ে চলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে। তারাই এখন বিএনপির দাপুটে ‘হর্তাকর্তা’। তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছেন নব্য বিএনপি নামধারী অনেকে। যারা কখনোই বিএনপিতে সম্পৃক্ত ছিলেন না, তারাই এখন নানা জায়গায় দখল পর্বে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আবার তারাই এখন তৃণমূলের ত্যাগীদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন।
দলীয় কার্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের অলিগলিতে এখন তাদের ব্যানার, পোস্টার শোভা পাচ্ছে। বিভিন্ন নেতার বাসাবাড়ি কিংবা অফিসে এসব নেতার পদচারণাও বাড়ছে। ভিড় করছেন বিভিন্ন লবিং-তদবির নিয়ে। অন্যদিকে, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যেসব নেতাকর্মী রাজপথে ছিলেন, মামলা-হামলায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন, তারা এখন ‘অসহায়’। হাইব্রিড নেতাদের চাপে তাদের অনেকেই এখন দলীয় কার্যালয়, নেতাদের বাসাবাড়ি এড়িয়ে চলছেন। অহেতুক মিথ্যা অভিযোগে বহিষ্কার আতঙ্ক নিয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ককয়েকজন সদস্য বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করা ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী। ওই দলটির নেতাকর্মীরা এখন খোলস পরিবর্তন করে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে। রয়েছে এ বিষয়ে দলের নেতাকর্মীকে সতর্ক করা হয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, ওয়ান-ইলেভেন থেকে শুরু করে আওয়ামী সরকারের আমলে সীমাহীন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মীরা রাজপথে থেকেছেন। অনেকে গুম হয়েছেন, অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। দলের এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। অনেকের বিরুদ্ধে মামলার তিন সেঞ্চুরিও পার হয়েছে বিগত দিনে। এসব মামলায় সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে তাদের। অনেকের সহায়-সম্পদ দখল করা হয়েছে, অনেককে ঘরবাড়ি ছাড়া হতে হয়েছে। তবে যেসব নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করেছেন, তারা ছিলেন বহাল তবিয়তে। ওই সময়ে তারা নিজেদের মতো করে ব্যবসা করেছেন, নিরাপদে থেকেছেন। কোনো নির্যাতন তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। তারা সব সময়ই বিভিন্ন লবিং-তদবিরে পদ বাগিয়েছেন। আর এখন দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারাই দলের সামনের সারিতে চলে এসেছেন। এটা শুধু বিএনপির নেতাকর্মীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। দল-সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের মধ্যেও বিস্তার করেছে। সাংবাদিক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্যান্য পেশার মধ্যেও দৌরাত্ম্য বেড়েছে বিগত দিনের নিষ্ক্রিয়দের। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে একসময় পুরো দলকে এর চরম খেসারত দিতে হবে বলে শঙ্কিত বিএনপির নেতারা।
নেতারা বলছেন, বিএনপির সুদিনের সম্ভাবনায় এখন অনেক হাইব্রিড নেতা জুটতে শুরু করেছেন, আওয়ামী লীগের অনেক সুবিধাভোগী খোলস পরিবর্তন করে বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে চাচ্ছেন। এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বিভিন্ন কায়দা-কানুন করে দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে আখের গোছানোর চেষ্টা করছেন বলে তারা জানতে পারছেন। এসব নেতাকর্মীই দেশের বিভিন্ন জায়গায় অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। চতুর প্রকৃতির হাইব্রিড নেতারা সুযোগ বুঝে সটকে পড়লেও ধরা খাচ্ছেন বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মী। যাদের অপকর্মের দায়ে বহিষ্কার হতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপি নেতা মোস্তফা জামানের সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রায়ই বলতে দেখা যায় হাইব্রিড নেতাদের বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছেন। এরই মধ্যে দল থেকে নেতাকর্মীকে সতর্ক করা হয়েছে। দলে যোগদান অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পরও বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অনেকে অনেক অপকর্ম করছেন। যাদের সঙ্গে বিএনপির ন্যূনতম কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এসব বিষয়ে তারা যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন। বিএনপির দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, পরিশ্রম করেছেন– দল তাদের মূল্যায়ন করবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীকে বিভিন্ন সময়ে আশ্বস্ত করেছেন।