উত্তরায় এপিবিএন কার্যালয়ের এসআই দেলোয়ার ও তার স্ত্রী’র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দুদকে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা উত্তরা ডি.আই.জি এ.পি.বি.এন. কার্যালয়ের এস আই দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী মনিরা ইয়াছমিন হাসি, তদবির বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাত করে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড় !

পুলিশের চাকুরী করা অবস্থায় এতো অল্প দিনেই অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় দেখে অবাক হয়েছেন তার কর্মস্থলের অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা এবং তার গ্রামের বাড়ির আশপাশে লোকজনের একই কথা অল্প দিনের মধ্যে কিভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন! সরকারি অর্থ আত্মসাত, ঘুষ, দুর্নীতি, তদবির বাণিজ্য,এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার এফডিআর মাধ্যমে জমা রয়েছে এবং দেশেরে বিভিন্ন স্থানে আরো অনেক অবৈধসম্পদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তার নামে ও বেনামে।

দেলোয়ার হোসেন লালমনির হাট সদর স্টেডিয়াম রোড লালমনির হাট আমিনুল হকের ছেলে। বর্তমান তিনি উত্তরা পূর্ব ৪নং বাসা,ফ্ল্যাট নং-(এক্স-৪) রোড-৩, সেক্টর-৪ , এখানে সপরিবারে নিয়ে বসবাস করছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা উত্তরা এ.পি.বি.এন,‘ডি.আই জি কার্যালয়ে কর্মরত আছেন উপ পরিদর্শক(এস আই)দেলোয়ার হোসেন। তার কর সার্কেল-৯৮, কর অঞ্চল-০৫, ঢাকা টিন নং-৮৪৪৬৭৩২৩৯৯৭৫ । তার অবৈধ সম্পদের বিবরণী, ঢাকার উত্তরা পূর্ব বাসা নং-৪০, ফ্ল্যাট নং- (এক্স-৪) রোড-০৩, সেক্টর-০৪। উক্ত বাসাটিতে তিনি সপরিবারে বসবাস করেন। বাসাটির মূল্য প্রায় কোটি টাকার উপরে কিন্তু তিনি ফ্ল্যাটটি ক্রয় করতে মূল্য দেখিয়েছে ৩২ লক্ষ টাকা।

লালমনিরহাট জেলায় ৫ শতাংশ জমির উপর তার স্ত্রী শেফালী বেগম এর নামে ও নিজ নামে ৩য় তলা ভবন নিমার্ণ করেছেন। তাতে তিনি ৪৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৮০২ টাকা ব্যয় করেছেন। ঢাকার বাড্ডায় ৩৯৩ শতাংশ জমি ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৪৪ টাকায় ক্রয় করেছেন। এবং ১২৯৫ স্কয়াফিট ফ্ল্যাট তিনি ৩০ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। বাসা-২১০, দক্ষিণ মোল্লারটেক, দক্ষিণখান, উত্তরায় তিনি ১০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে জমিটি ক্রয় করে সেখানে ৬ষ্ঠ তলা বাড়ি নিমার্ণ করেছেন কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে। ২৫ শতাংশ জমি হাড়িভাঙ্গা লালমনির হাট ক্রয় করেছেন ১ লক্ষ টাকা দিয়ে। ১.৮০ শতক জমির উপর ৭০০ স্কয়াফিট ৩য় তলা ভবন নিমার্ণ করেছেন ৩৮ লক্ষ ৮৯ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয় করে। ৭ শতাংশ জমি ও টিনসেড ঘর লালমনির হাটে নির্মাণ করতে ব্যয় করছেন ২ লক্ষ টাকা। ৭৫০ স্কয়ারফিট ফ্ল্যাট বাসা নং-২৮, উদয়ন স্কুল রোড উদায়ন টাওয়ার, ঢাকা ৪টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ৭৬ লক্ষ টাকা দিয়ে। ৩০৬৯.৩৩ শতাংশ জমি পশ্চিম মোল্লারটেক দক্ষিণ খান ঢাকায় জমি ক্রয় করেছেন ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে। দেলোয়ার হোসেন ১৯৮৯ সালে পুলিশ বাহিনীতে কন্সটেবল পদে যোগদান করেন। এর পর তার পদোন্নতি বাড়তে থাকে এবং সম্পদেরও পাহাড় গড়তে থাকেন। তাকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগীতা করেছেন আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে কয়েকজন পুলিশের উদ্বতন কর্মকর্তারা তবে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন তারা। কিন্তু উপ পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন এত দুর্নীতি ও অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার পরও এখনো বহাল তরীয়তে রয়েছেন । এখনো তিনি চাকরিকে হাতিয়ার হিসেবে বানিয়ে এখনো সে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে ।

তার অবৈধ সম্পদ বিভিন্ন জেলায় রয়েছে বলে বিভিন্ন মারফতে জানা গেছে। তিনি তার অবৈধ সম্পদ রক্ষাকরতে বিভিন্ন ভাবে সাংবাদিকদের হয়রানি করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন। তার বিষয়ে বড় আকার পদক্ষেপ গ্রহন না করলে পুলিশ প্রশাসনের সুনাম নষ্টের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। তিনি বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলায় যখন কর্মরত ছিলেন সেই সময় বরিশাল জেলার ও বিভাগের কয়েকটি বিল্ডিং নিমার্ণনের সময় তিনি অর্থ শাখার দায়িত্ব থাকা কালে থেকে তার উত্থান। তিনি সেখানে পুলিশের বড় কর্মকর্তার সঙ্গে আতাত করে সঠিক ভাবে কাজ না করে সরকারি অর্থ আত্মসাত করে বরিশালে একটি ৬ষ্ঠ তলা বাড়ি নিমার্ণ করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় পুষ্টিং নেওয়ার পর উত্তরায় বর্তমান বাসার ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেন। এর পর তিনি পুলিশ সদরদপ্তরে পুষ্টিং নেওয়ার পর পুলিশের নিয়োগ বাণিজ্য, তদবির বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, করে কোটি কোটি টাকা অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এ ব্যাপারে এস আই দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমেই তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করলে তখন তিনি স্বীকার করেন তার সম্পদের পাহাড়ের কথা । তারপরও বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা কথার বলে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন।

কোন সাংবাদিক তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে তিনি পুলিশ দিয়ে হয়রানি করে, মামলার ভয়ভীতি দেখায়। এবং স্থানীয় গুন্ডা ও মাস্তান বাহিনী দিয়ে সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিকদের অনুসন্ধান কাজে বাধা প্রদান করেন। তিনি একজন উপ পরিদর্শক ( এস আই) হওয়ার সুবাদে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে তার অবৈধ সম্পদ রক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রকার কলাকৌশল অবলম্বন করেন। এছাড়া সাংবাদিক অনুসন্ধা করতে গেলে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি সহ বিভিন্ন প্রকার মামলা হামলা করার চেষ্টা করেছেন। এই সব তথ্য গুলো পাওয়া গেছে, চলতি বছরের ২৩ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের আকবর হোসেন নামে এক ব্যক্তি লিখিতভাবে অভিযোগ করেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী মনিরা ইয়াসমিন হাসি বিরুদ্ধে। সেই লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে তাদের দুর্নীতি অপকর্মের তথ্যগুলি পাওয়া যায়। লিখিত অভিযোগে অভিযোগকারী আরো বলেছেন, পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে আমার আহ্বান রইল তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক। তাদের জন্য পুলিশের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *