ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘর্ষ: যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক: দক্ষিণ লেবাননের তালুসা ও হেরিস শহরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। লেবাননের কর্তৃপক্ষ বলছে, দক্ষিণ লেবাননের অন্য অঞ্চলেও হামলায় আরও ২ জন নিহত হয়েছেন।

হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার পরপরই হিজবুল্লাহ অভিযোগ করে যে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। জবাবে তারা শেবা ফার্মস এলাকায় ইসরায়েলি সেনা অবস্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠী তাদের হামলাকে ‘প্রতিরক্ষামূলক সতর্কতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

সংঘাতের প্রেক্ষাপট
বৈরুতের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পরপরই তারা ড্রোনের শব্দ শুনতে পান। এই গোলাগুলির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় চলে গেছে, যা কার্যকর হওয়ার এক সপ্তাহও পার হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েল লেবাননে আক্রমণ চালাতে পারবে না, এবং লেবাননকেও নিশ্চিত করতে হবে যে কোনও সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের ওপর হামলা চালাবে না।

প্রতিক্রিয়া ও অভিযোগ
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, হিজবুল্লাহর হামলায় তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুমকি দিয়েছেন। হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর এটি তাদের প্রথম প্রতিক্রিয়া।

লেবাননের পার্লামেন্ট স্পিকার ও হিজবুল্লাহর মিত্র নাবিহ বেরি বলেছেন, বুধবার থেকে ইসরায়েলের অন্তত ৫৪টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। লেবাননের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানায়, বেন্ট জবেইল জেলার বেইত লিফ শহরে দুটি আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ এবং ইয়ারুনে ভারী মেশিনগান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “আমরা ফ্রান্স, ইসরায়েল এবং লেবাননের সঙ্গে মিলে লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত এবং সমাধানের চেষ্টা করছি। যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক সময়গুলো সাধারণত নাজুক হয়, তবে এটি এখন পর্যন্ত সহিংসতা কমাতে ভূমিকা রেখেছে।”

এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি তৈরি করছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।