আন্তর্জাতিক ডেস্ক :গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চালানো নিরলস এই আগ্রাসনে এতিম হয়ে গেছে ভূখণ্ডটির ৩৮ হাজারেরও বেশি শিশু। আর স্বামীহারা হয়ে বিধবা হয়েছেন প্রায় ১৪ হাজার নারী। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু এতিম হয়ে গেছে। জাহের আল-ওয়াহিদি নামের ওই কর্মকর্তা আনাদোলুকে বলেছেন, “ইসরায়েলি এই বর্বরতায় কমপক্ষে ১৩ হাজার ৯০১ জন নারীও বিধবা হয়েছেন।ফিলিস্তিনি এই কর্মকর্তা বলেছেন, দীর্ঘ এই আগ্রাসনে প্রায় ৩২ হাজার ১৫১ জন শিশু তাদের বাবাকে হারিয়েছে। এছাড়া ৪ হাজার ৪১৭ জন শিশু তাদের মাকে হারিয়েছে এবং ১ হাজার ৯১৮ জন শিশু তাদের মা-বাবা উভয়কেই হারিয়েছে।
তিনি বলেন, “এই পরিসংখ্যানগুলো গাজার জনগণের যন্ত্রণার মাত্রা কতটা তীব্র সেটিকেই প্রতিফলিত করে। আর এই কারণে এতিম এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দুঃখকষ্ট দূর করতে এবং তাদের জীবন পুনর্গঠনের জন্য সকলকে জরুরিভাবে কাজ করতে হবে।গাজায় ছয়-সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায় গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়েছে। সেদিন থেকেই গাজায় বন্ধ হয়েছে ইসরায়েলি আগ্রাসন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলা এই আগ্রাসনে গাজায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া আরও ১ লাখ ১১ হাজার ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।এদিকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের আপাতত অবসান ঘটলেও ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আক্রমণে নিখোঁজ রয়েছেন ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।