চ্যানেল7বিডি ডেক্স: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ১৫ মাস পার করেছে। প্রতিদিনের বোমা বিস্ফোরণে গাজার বিভিন্ন এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলা, হতাহতের সংখ্যা, এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের বেদনাদায়ক চিত্র উঠে আসছে।
ঘটনার সূচনা
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আকস্মিক হামলা চালায়। এতে ১,১০০ জনের বেশি নিহত হন এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সেদিনই গাজায় ব্যাপক আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
হতাহতের সংখ্যা
গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণে ১৫ মাসে নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৬,৭০৭ জন, যার মধ্যে ১৮,০০০ শিশু। অর্থাৎ প্রতি ৫০ জনে ১ জন নিহত হয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
আহত ও অঙ্গহানি
এই সময়ে আহত হয়েছেন ১,১০,২৬৫ জন, যা গাজার প্রতি ২০ জনে ১ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, তাদের মধ্যে ২২,৫০০ জনের চিরস্থায়ী শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিদিন গাজায় অন্তত ১০ শিশু তাদের একটি বা দুটি পা হারাচ্ছে।
নিখোঁজ এবং ধ্বংসস্তূপ
ধারণা করা হচ্ছে, হাজারো মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। গাজায় প্রায় ৮৫ হাজার বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার ফলে ৪ কোটি ২০ লাখ টন ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই ধ্বংসস্তূপ সরাতে এক দশকেরও বেশি সময় লাগতে পারে।
মানবিক বিপর্যয়
গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ এবং পানির সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। তীব্র শীত আর ক্ষুধার্ত অবস্থায় তাঁবুতে দিন কাটাচ্ছে উদ্বাস্তু মানুষ। এখন পর্যন্ত হাইপোথার্মিয়ায় অন্তত আট শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আশ্রয় সংকট
গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১৯ লাখই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ শীত থেকে সুরক্ষা ছাড়াই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এত সব প্রতিকূলতার মধ্যেও গাজার মানুষ যুদ্ধবিরতির খবরে সাময়িক আনন্দ পেয়েছেন। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত।