অনলাইন ডেক্স: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ‘গডফাদার’ নামে পরিচিত ব্রিটিশ-কানাডিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী জিওফ্রে হিন্টন সতর্ক করেছেন, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এআই মানবজাতিকে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিতে পারে। এআইয়ের অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা সম্পর্কে তিনি বলেন, “এআইয়ের সামনে মানুষ এক তিন বছরের শিশুর মতো অসহায়।“
এআইয়ের বাড়তে থাকা ঝুঁকি
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রফেসর হিন্টনকে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে। নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং মেশিন লার্নিংয়ে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি পান।
বিবিসির রেডিও ফোরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিন্টন বলেন, “আগামী ৩০ বছরে মানুষের বিলুপ্তির সম্ভাবনা ১০ থেকে ২০ শতাংশ। গত বছর এই হার ছিল ১০ শতাংশ, কিন্তু এখন তা বেড়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আগে কখনো এমন একটি বুদ্ধিমান সত্তার মুখোমুখি হইনি, যা মানুষের চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান।”
মানুষ বনাম এআই: এক অসম লড়াই
মানুষ এবং এআইয়ের তুলনা করতে গিয়ে হিন্টন বলেন, “একটি তিন বছরের শিশুর সামনে যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক থাকে, তাহলে শিশুটির ক্ষমতা খুবই সীমিত। ভবিষ্যতে মানুষও হয়তো এআইয়ের সামনে এমন অবস্থায় পড়বে।”
নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং হিন্টনের পদত্যাগ
২০২৩ সালে গুগলে কাজ করার সময় হিন্টন এআই প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের বিপদ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “অসৎ ব্যক্তিরা যদি এআই ব্যবহার করে, তবে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।”
পরবর্তীতে এই উদ্বেগ প্রকাশের কারণে গুগল থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
এআই নিয়ন্ত্রণে জরুরি ব্যবস্থা প্রয়োজন
হিন্টন বলেন, “এআই প্রযুক্তির অগ্রগতি প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কখনোই মনে হয়নি যে আমরা এত দ্রুত এই পর্যায়ে পৌঁছাব।”
বিশ্বজুড়ে সরকারগুলোকে এআই নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “২০ বছরের মধ্যে এআই হয়তো মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান হয়ে উঠবে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।”
নতুন বাস্তবতা: প্রস্তুতি জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবজাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এআই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। হিন্টনও জোর দিয়ে বলেছেন, “এআই যেন মানবতার উপকারে আসে, তা নিশ্চিত করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”