আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে শিগগিরই পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার: আসিফ মাহমুদ

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে শিগগিরই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে ইতোমধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া:
তিনি জানান, “বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াও চারটি আইন রয়েছে, যেখানে সরকার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত আইনি কাঠামো এখনো নির্ধারিত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট। বিচারিক প্রক্রিয়ায় এটি প্রমাণিত হলে দলটির নিবন্ধন বাতিলসহ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন রাজনৈতিক দলের সম্ভাবনা:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একটি গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর যদি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ না হয়, তাহলে সেই পরিবর্তনের সুফল নষ্ট হয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, “৫ আগস্টের পর আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া অনেকে এখনো কোনো রাজনৈতিক ব্যানারের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। কিন্তু তারা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করছে এবং একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা করছে। তবে, এখনো দলের নাম চূড়ান্ত হয়নি।

নতুন রাজনৈতিক দলে সরকারের ভূমিকা:
সরকারের কোনো প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দলে যুক্ত হবেন কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারে যারা ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন, তারা যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেন, তাহলে অবশ্যই তাদের সরকার থেকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে।

নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান:
সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে এলজিআরডি উপদেষ্টা বলেন, “এটি মোটেও সাংঘর্ষিক নয়। সরকার একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক কাঠামো গঠনের লক্ষ্যেই ক্ষমতায় এসেছে।

তিনি আরও বলেন, “আগে কিছু রাজনৈতিক দল দাবি করেছিল যে, বিদ্যমান কাঠামোতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। অথচ এখন তারাই সেই কাঠামোর মধ্যেই নির্বাচন চাইছে। এটি কতটা বাস্তবসম্মত, তা তাদের ব্যাখ্যা করতে হবে।

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
আসিফ মাহমুদ জানান, “সংস্কার কমিশন ছয়টি প্রতিবেদন দিয়েছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে সহায়তা করবে। আমরা মনে করি, অর্থবহ সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

সংক্ষেপে মূল পয়েন্ট:
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে সরকার
চারটি আইনের মাধ্যমে নির্বাহী আদেশে দল নিষিদ্ধ করা সম্ভব
বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা প্রমাণ হলে নিবন্ধন বাতিল হবে
৫ আগস্টের পর আন্দোলনকারীদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হবে

তথ্যসূত্র: বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।