চ্যানেল7বিডি ডেক্স: দেশে কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি জানিয়েছে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে অস্থিতিশীলতা বাড়বে এবং দেশের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, পরিস্থিতির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। অপ্রয়োজনীয় ইস্যুতে সময় নষ্ট না করে, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
দলটি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, “সরকার যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হবে। এতে উগ্র গোষ্ঠী, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি এবং পরাজিত ফ্যাসিস্টরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।”
গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের অবমাননায় জনগণের ক্ষোভ
বিএনপি দাবি করেছে, “জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মত্যাগকে অবজ্ঞা করে পরাজিত স্বৈরাচার ও তার সহযোগীরা উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। তাদের এই বক্তব্য জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যার ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বৈরাচারীদের বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।”
দলটি আরও অভিযোগ করেছে, গত ছয় মাসে অন্তর্বর্তী সরকার পরাজিত স্বৈরাচার ও তার সহযোগীদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। “সরকারের ব্যর্থতার কারণেই জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে। এটা সরকারের জন্য উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত।”
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন
বিএনপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “সরকার যদি জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতো, তাহলে জনগণ নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিত না।”
দলটি নিম্নলিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে—
✅ গণঅভ্যুত্থানের শহিদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা
✅ পরাজিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা
✅ বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা
✅ গণতন্ত্রকামী নাগরিকদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আমলের মামলাগুলো প্রত্যাহার করা
✅ একটি স্বাধীন ও প্রভাবমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা
✅ পর্যায়ক্রমে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার রূপরেখা দেওয়া
সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি
বিএনপি বলেছে, “সরকার যদি জনগণের দাবির প্রতি গুরুত্ব না দেয়, বরং নিজের মতো করে নতুন ইস্যু তৈরি করে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়, তাহলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেবে— বুধবারের ঘটনা তারই প্রমাণ।”
দলটি আরও যোগ করেছে, “কোনো কিছু ধ্বংস বা নির্মূল করাই একমাত্র সমাধান নয়। ইতিহাসের অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্টদের কর্মকাণ্ডও ভবিষ্যতের জন্য সাক্ষী হয়ে থাকবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার জনগণকে এই বার্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।”
তথ্যসূত্র: বাসস