সৌদি কোম্পানি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: সৌদি আরবের মালিকানাধীন বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল বাংলাদেশের মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কোম্পানির নির্বাহী চেয়ারম্যান আমের এ. আলিরেজা এই বন্দরের উন্নয়ন ও পরিচালনায় সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যা মাতারবাড়িকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে বৈঠক:
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের চেয়ারম্যান আমের এ. আলিরেজা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে মাতারবাড়ি বন্দরের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এলাকায় আরও বন্দর তৈরি করবে। এই উদ্যোগ চট্টগ্রামকে একটি আন্তর্জাতিক রপ্তানি ও শিপিং হাবে রূপান্তর করতে সহায়তা করবে।

রেড সি গেটওয়ের পরিকল্পনা:
রেড সি গেটওয়ে বর্তমানে পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এবং টার্মিনালের দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে চীন থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলারের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ক্রেন এবং অন্যান্য সরঞ্জাম আমদানির আদেশ দিয়েছে। তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও ২৫ মিলিয়ন ডলারের সরঞ্জাম অর্ডার দেবে বলে জানিয়েছে।

এই নতুন সরঞ্জামগুলো হাইব্রিড প্রযুক্তিতে নির্মিত, যা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উভয় দিয়েই চালানো যাবে। এই উদ্যোগ কার্বন নিঃসরণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আলিরেজা উল্লেখ করেন।

মাতারবাড়িকে শিপিং হাবে রূপান্তরের পরিকল্পনা:
আলিরেজা মাতারবাড়িকে একটি আঞ্চলিক শিপিং হাবে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বড় ভূমিকা রাখবে। বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধির ফলে অনেক আন্তর্জাতিক কোম্পানি তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থাপন করতে আগ্রহী হবে।”

উপস্থিতি:
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

উপসংহার:
সৌদি কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের বন্দর খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিপিং হাবে পরিণত করার সুযোগ তৈরি করবে।

তথ্যসূত্র: বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।