চ্যানেল7বিডি ডেক্স: পতনের আগে পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে আহতদের চিকিৎসা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, এই নির্দেশনার প্রমাণ প্রসিকিউশনের হাতে রয়েছে এবং তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ নির্দেশনার তথ্য প্রকাশ
আজ আদালতে শুনানি শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে আমরা জানতে পারি, শেখ হাসিনা সেখানে গিয়ে বলেছিলেন—নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ। অর্থাৎ, আহতদের চিকিৎসা না দিতে এবং কাউকে হাসপাতাল থেকে বের হতে না দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, রোগীদের পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও আমাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আমরা এর যথাযথ প্রমাণ পেয়েছি এবং তা আদালতে উপস্থাপন করেছি।
গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার
চিফ প্রসিকিউটর আরও জানান, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের মৃত্যুর সঠিক কারণ গোপন করতে প্রশাসন নানা কৌশল নিয়েছিল।
তিনি বলেন, অনেক শহীদের মৃতদেহের সুরতহাল বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট তৈরি করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি, গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে শ্বাসকষ্ট বা জ্বরের মৃত্যু বলে উল্লেখ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
এছাড়া, শহীদের লাশ দাফনের চেষ্টা করলে পরিবারের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনাও ঘটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট প্রমাণ
আদালত প্রসিকিউশনের কাছে জানতে চেয়েছে, শহীদদের সুরতহাল প্রতিবেদন এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্ট কেন অনুপস্থিত। জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে এমন ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল যে, দ্রুত দাফন করতে বাধ্য হওয়ায় এসব রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এটি একটি জাজ্বল্যমান মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ, যা শেখ হাসিনার শাসনামলের নিষ্ঠুরতার চিত্র তুলে ধরে।
ফরেনসিক তদন্ত ও আদালতে উপস্থাপন
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আরও জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্মমতার প্রমাণ যাচাই-বাছাই ও ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার অংশ হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
তথ্যসূত্র: বাসস