অনলাইন ডেক্স: সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, নাগরিকদের ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ কথা বলেন। ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সংলাপের উদ্বোধনী পর্বটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, তবে সংস্কারের দায়িত্ব সবার। ভোটাররা তো অংশ নেবেনই, পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ভোটারদেরও সংস্কারে ভূমিকা রাখতে হবে। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন দেশের অগ্রগতিকে ব্যাহত করবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী জানুয়ারিতে সংস্কারের জন্য গঠিত ১৫টি কমিশনের প্রতিবেদন জমা হবে। এসব কমিশনের দায়িত্ব হলো বিভিন্ন বিকল্প সুপারিশ প্রস্তুত করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তি তৈরি করা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘কমিশনের সুপারিশ মানতে সবাই বাধ্য নন। এজন্য জাতীয় ঐকমত্য গঠনের একটি কমিশনও রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ নির্ধারণ করা উচিত। যদি দেশের বেশিরভাগ মানুষ এটি পছন্দ করে, তবে আমি তা সমর্থন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যেতে চাই। ঐক্যের মাধ্যমেই সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব।’
ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগ তখনই সার্থক হবে, যখন আমরা একটি সাম্যবাদী, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করব।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘ফ্যাসিবাদ আমাদের জাতীয় লক্ষ্য ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত করেছিল। এখন সময় এসেছে ঐক্যের মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পুনরুদ্ধার করার।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই ঐক্যের শক্তিতেই আমরা অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে পারব এবং এমন একটি সমাজ গড়ে তুলতে পারব যেখানে সবার পরিচয় হবে একটাই—আমি বাংলাদেশের নাগরিক। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হবে নাগরিকদের সকল অধিকার নিশ্চিত করা।’
সংলাপের শেষ পর্যায়ে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সংস্কার ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।