বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: ১০ হাজার শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় ইউজিসি ও ইউনেস্কো

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: দেশের ২২টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০,০০০ শিক্ষার্থীকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও ইউনেস্কো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে সহিংসতার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইউজিসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ প্রকল্পের পিআইসি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগ
প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলের নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক ট্রমা মোকাবিলা ও শিক্ষায় মনোনিবেশ নিশ্চিত করতে বিশেষ কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা হবে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার একটি কার্যকর ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা হবে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিদের এই উদ্যোগে সম্পৃক্ত করা হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ভয়াবহ ট্রমার মধ্যে রয়েছে। তাদের পুনর্বাসন ও মানসিক সুস্থতার জন্য কাউন্সেলিং সেবা অত্যন্ত জরুরি।

অধ্যাপক মেহজাবিন হক বলেন, আন্দোলনের সময় আহত শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক চাপ তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলেছে। বিশেষ করে, যেসব শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য ট্রমা থেরাপি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, সরকারি সহায়তায় মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ট্রমা ব্যবস্থাপনায় আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার।

ছাত্র সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোকেও এই উদ্যোগের আওতায় আনার সুপারিশ করেন, কারণ এই আন্দোলনে তাদেরও বড় অংশগ্রহণ ছিল।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন
বিশেষজ্ঞদের মতে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি ও রিহেবিলিটেশন বিভাগ থেকে আহত শিক্ষার্থীদের সেবা নিশ্চিত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থাও করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে আন্দোলন-পরবর্তী শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *