নিজস্ব প্রতিনিধি: বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি তার সহধর্মিণী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন আবদুল্লাহ আল নোমান। দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।
এদিকে, আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। ধানমন্ডির বাসায় নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ নেতারা বাসার পথে রয়েছেন। বাদ আসর নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে নোমান ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। তিনি মেননপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
ছাত্রজীবন শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে তিনি শ্রমিক রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন এবং ভাসানীপন্থী ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হন। ১৯৭০ সালে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পর তিনি আবারও ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর ১৯৮১ সালে তিনি দলে যোগ দেন। চট্টগ্রামের রাউজান ও কোতোয়ালি আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি সরকারের মন্ত্রিসভায় খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেন।