পৈত্রিক ভিটায় ফিরতে চায় ৪০ সদস্যের পরিবার – আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ 

মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি: ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে বাড়িঘর ভেঙে লুটপাট করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে ওই জমি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার অভিযোগ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সেই বাপ-দাদার ভিটায় আবারও ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন ওই পরিবারে সদস্যরা। ঘটনাটি নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের সুটুরিয়া গ্রামের। নরসিংদী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না তারা।  

লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুটুরিয়া গ্রামের আব্দুল গফুর একজন সক্রিয় বিএনপির নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৮ মে একই গ্রামের মতিউর রহমান বাদশার ছেলে জাকির হোসেন ভূঁইয়া এবং বেলাব উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ ভূঁইয়া কমলের নেতৃত্বে বেলাব এবং মনোহরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের

 কয়েকশ নেতাকর্মী আব্দুল গফুরের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় আব্দুল গফুর ও তাঁর চার ছেলের নয়টি মাটির ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। এমনকি ভিটের মাটি কেটে নিয়ে বাদশার জমিতে ফেলা হয়। পরবর্তীতে ওই জমি তারা দখলে নেয়। লুটপাট চলাকালে গফুরের পরিবারের লোকজন এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যার যার আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে।  

আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুস সোবহান জানান, আমার পিতার মৃত্যুর পর তাঁর রেখে যাওয়া ছয় বিঘা জমি আমরা ভোগ দখল করে আসছি। এসব জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান বাগান এবং বসতভিটা ছিল। শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় আমাদের সমস্ত সম্পত্তি থেকে জোরপূর্বক দখল করে নেয় মতিউর রহমান বাদশার ছেলেরা। ২০০৯ সালের ৮ মে কয়েকশ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। এতে আমাদের প্রায় ৬০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসময় আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে  আমাদেরকে বেদম মারপিট করে এতে আমার দুই ভাই গুরুতর আহত হয় । আহত আব্দুল খালেক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আরেক ভাই বর্তমানে মানসিক ভারসাম্যহীন। 

ঐ দিনই আমাদেরকে এক কাপড়ে বের করে দেয় সন্ত্রাসীরা। তারপর থেকে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি। আমরা পৈত্রিক ভিটায় ফিরতে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোন বিচার পাইনি। এমনকি ভাই হত্যারও কোন বিচার হয়নি। 

উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বাচ্চু ,সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ হারুন অর রশিদ সহ স্থানীয়রা  জানান, বিএনপি করার কারণে এই পরিবারটিকে ভিটে ছাড়া করে লুটপাট করা হয়। এমনকি ভিটের মাটি পর্যন্ত কেটে নিয়ে যায় আওয়ামী বাহিনী। তখন চোখে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না আমাদের! এদিকে ভুক্তভোগী আব্দুল আউয়ালের ছেলে সোহাগ মিয়া জানান আমি তখন এসএসসি পরীক্ষার্থী আমার অন্যান্য ভাই-বোনরাও ছোট ছোট তখনকার সময় তাদের এমন নির্দয় অত্যাচার আমাদের পুরা পরিবারটাই ধ্বংসস্তূপ হয়ে গেছে। তারা আমাদের প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে এমনকি আমাদের পরনের কাপড় ছাড়া বই খাতা কলম পর্যন্ত নিতে পারিনি। পাখির ও বাসা থাকে আমাদের কিছুই নাই আমরা আমাদের পৈত্তিক ভিটায় আমরা পুরো পরিবার পুনরায় একত্রে বসবাস করতে চাই। দেশবাসী ও প্রশাসনের কাছে এটাই আমাদের চাওয়া। এব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির আহমেদ ভূইয়া কমল জানান, গফুর মিয়ার পরিবারের সাথে আমাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপির ক্ষমতাবলে গফুরের পরিবার জোরপূর্বক আমাদের জমিজমা দখল করে নিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে বেলাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম বলেন অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *