পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত রায়ের প্রশংসা বিএনপির, তবে…

ডেস্ক রিপোর্ট :  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আদালত পঞ্চদশ সংশোধনীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ অবৈধ ঘোষণা করেছে, কিছু অংশ সংরক্ষণ করেছে এবং অধিকাংশ আগামী সংসদের বিবেচনার জন্য ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু রিট আবেদনকারীগণ, সংযুক্ত হওয়া রাজনৈতিক দলসমূহ ও অন্যান্য অংশীজন এবং দেশের জনসাধারণ আদালতের কাছে আরও বেশি কিছু সিদ্ধান্ত আশা করেছিলো। রিট আবেদনকারীগণ পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার প্রার্থনা করেছিলেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তার প্রশংসা করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমরা এই রায়কে ‘অ্যাপ্রিশিয়েট’ করি। আদালত স্বীকৃতি দিয়েছে যে, নির্বাচিত পরবর্তী সংসদই সংবিধান সংশোধনীর একমাত্র উপযুক্ত ফোরাম। তবে আদালতের কাছে আরও বেশি কিছু সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা ছিল।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত আদালতের রায়ের বিষয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। বুধবার অনুষ্ঠিত বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে মোট ৫৫টি দফায় সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে প্রস্তাবনায় এবং তফসিলে ব্যাপক পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন ও বিয়োজন করার মধ্য দিয়ে সংবিধানকে একদলীয় শাসন এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েমের প্রধানতম হাতিয়ারে পরিণত করা হয়। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো অর্থাৎ ‘বেসিক স্ট্রাকচার’কে ক্ষতিগ্রস্ত করে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করে দেয়া হয়।তিনি বলেন, ‘আদালত উন্মুক্ত আদালতে রায়ের ঘোষণার সময়ে কিছু কিছু বিষয়ে মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণসহ উক্ত সংশোধনীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন এবং কিছু অংশ সংরক্ষণ করেছেন এবং অধিকাংশ আগামী সংসদের বিবেচনার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু রিট আবেদনকারীগণ, সংযুক্ত হওয়া রাজনৈতিক দলসমূহ ও অন্যান্য অংশীজন এবং দেশের আপামর জনসাধারণ আদালতের কাছে আরও বেশি কিছু সিদ্ধান্ত আশা করেছিলো। তিনি বলেন, ‘রিট আবেদনকারীগণ পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার প্রার্থনা করেছিলেন। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রিটের পক্ষে ইন্টারভেনর হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অবিলম্বে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থায়ী কমিটি। লিয়াজোঁ কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

আগামী নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি স্থায়ী কমিটি মনে করে, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে গেছে সেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিলম্বের প্রয়োজন নেই। নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগণ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা উচিত। সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *