জাহাঙ্গীর গেইটে চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অবরোধে দুই ঘণ্টা যানজট

অনলাইন ডেক্স: ঢাকার জাহাঙ্গীর গেইটে দুই ঘণ্টার অবরোধের কারণে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চাকরিচ্যুত এবং বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা তাদের তিন দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেন।

অবরোধের শুরু ও যানজট
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ‘সহযোদ্ধা’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে চাকরিচ্যুত সদস্যরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জাহাঙ্গীর গেইট এলাকায় অবস্থান নেন। বেলা ১১টার দিকে তারা সড়কে বসে পড়লে বিমানবন্দর সড়কের যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মহাখালী, বনানী, তেজগাঁও, বিজয় সরণি এবং আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

দাবি ও সমঝোতা
সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন এস এম এনামুল হাসান জানান, তাদের দাবিগুলো পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এবং একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরপর বেলা ১টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে আন্দোলনকারীরা স্বাধীনতা ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।

তিন দফা দাবি
বিগত সরকারের সময়ে চাকরি হারানো সদস্যদের বকেয়া বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।
পুনর্বহাল সম্ভব না হলে পেনশনের আওতায় এনে সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে
চাকরিচ্যুতির আইনি কাঠামো ও বিচার প্রক্রিয়ার সংস্কার করতে হবে।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ
একজন সাবেক সেনাসদস্য অভিযোগ করেন, কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যায়ভাবে শত শত সদস্যকে চাকরিচ্যুত করেছেন। অনেককে ‘আয়নাঘরে’ আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।

সরকারের প্রতিশ্রুতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ
‘সহযোদ্ধা’ প্ল্যাটফর্মের প্রধান সমন্বয়ক নাইমুল ইসলাম জানান, তিন বাহিনীর প্রধানরা আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

পূর্ববর্তী কর্মসূচি
গত ১৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মারকলিপি দেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একই দাবিতে তারা মানববন্ধন করেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা
তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন এবং ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তানিয়া সুলতানা জানান, যানজট নিরসনে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় ছিল।

এই অবরোধ এবং বিক্ষোভ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দাবির গুরুত্বকে সামনে নিয়ে এসেছে। এখন দেখার বিষয়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কত দ্রুত তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়িত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *